পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে পদোন্নতি পেয়ে সদ্য যোগদান করা চিকিৎসক ডা. জে এইচ খান লেলিনের অপসারণ ও শাস্তির দাবীতে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে কলাপাড়া মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স মাঠে এ গণস্বাক্ষর কর্মসূচির আয়োজন করেন কলাপাড়া বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা।
এর আগে গত মঙ্গলবার ১২ ফেব্রুয়ারি সকালে একই দাবিতে কলাপাড়া প্রেসক্লাব সংলগ্ন সড়কে মানববন্ধন করেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কলাপাড়ার সমন্বয়করা।
ডা: লেলিনকে নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের নেতিবাচক কথাবার্তা ঘুরপাক খাচ্ছে। তার নিজস্ব ফেসবুক আইডি থেকে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় দেয়া একটি পোস্টকে ঘিরে চলছে নানা আলোচনা সমালোচনা। দ্রুত বিষয় টি ভাইরাল হয় যেখানে লেখা রয়েছে ‘ দে দে মরন কামড় দে, দেরি করিস না। অস্তিত্বে বাংলাদেশ শেখ হাসিনা। এই লেখার সাথে ডাক্তার জে এইচ খান লেলিনের ছবি যোগ করে তাকে স্বৈরাচারের দোসর হিসেবে উল্লেখ করে উপজেলা স্বাস্থ্য প্রশাসক হিসেবে পদোন্নতি বাতিলের দাবি করা হয়েছে। কেউ বা বিচার দাবি করেছেন।
অভিযোগ রয়েছেন, তিনি দীর্ঘ দেড় যুগের ও বেশি কলাপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আবাসিক মেডিকেল অফিসার হিসেবে দায়িত্বে থাকা অবস্থায় বিগত আ.লীগ সরকারের তৎকালীন নেতাদের যোগসাজশে হয়ে ওঠেন বেপরোয়া। কয়েক বছরে তার বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ ওঠে। রোগীদের সাথে অসদাচরণ, টেস্ট বানিজ্য, সরকারি জমি বিক্রি করে অর্থ আত্মসাৎ, অবহেলায় তার হাতে মৃত্যু হয়েছে অনেক রোগী এমন অহরহ অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এছাড়া রয়েছে জখমী রোগীর এমসি বানিজ্যের অভিযোগ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তিনি হাসপাতালে আগত রোগীদের বিভিন্ন রকম টেস্ট দিয়ে তার নিজস্ব ক্লিনিক ম্যাক্স এবং কলাপাড়া ক্লিনিকে টেস্ট করাতে বাধ্য করেন।
অভিযোগ রয়েছে , ডা. লেলিনের ভুল চিকিৎসায় ইতিপূর্বে নবজাতক সহ রুনা (২০) নামের এক প্রসূতি নারী সহ একাধিক রোগীর মৃত্যুর হয়। এনিয়ে তার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা দায়ের করার পর তিনি ভিকটিম পরিবার গুলোকে ম্যানেজ করেন। আদালত তাকে এমসি বিতর্কে শোকজ করেন বেশ ক’বার।
কলাপাড়া উপজেলা ছাত্র প্রতিনিধি মাশরাফি কামাল শাফি বলেন, ফ্যাসিস্টের দোসর লেলিনের অপসারণ ও শাস্তির দাবিতে গণস্বাক্ষর কর্মসূচির আয়োজন করেছি। গত মঙ্গলবার একই দাবিতে কলাপাড়া প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেছি। আজ গণস্বাক্ষর কর্মসূচিতে উপজেলার ৮০০ মানুষ সাক্ষর করেছেন। আমরা এগুলো জেলা প্রশাসক , সিভিল সার্জন ও উপজেলা প্রশাসন বরাবর প্রেরণ করবো। তাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত বিভিন্ন রকম কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানান।
এ বিষয়ে ড. লেলিন বলেন, ল্যাব সংশ্লিষ্ট কেউ ব্যক্তি স্বার্থ হাসিল ও আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করতে আমার বিরুদ্ধে এমন অপপ্রচার চালাচ্ছেন।
পটুয়াখালী জেলা সিভিল সার্জন ড. হুমায়ুন কবির বলেন, এ বিষয়ে আমি এখনও লিখিত কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।