রবিবার, ২২শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

এগুললো নাটক, দুর্নীতিবাজদের শাস্তি হবে না গাজীপুরে জিএম কাদের

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় নেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি বলেছেন, যতগুলো দুর্নীতিবাজ নিয়ে আলোচনা হচ্ছে এদের একটি দুর্নীতিবাজেরও কোন শাস্তি হবে না বলে আমার ধারণা। এর আগে আমরা দেখেছি, ক্যাসিনো মামলা নিয়ে কত ধুমধাম- ধুমধাম, ক্যাসিনোতে কোন লোকের শাস্তি হয়েছে? এগুললো নাটক, নাটক। আবার দায় মুক্তি দেয়া হয়েছে কিছু লোকের অবৈধ টাকাকে বৈধ করার জন্য। ভয় দেখাচ্ছে কিছু টাকা দাও টাকা দাও। সরকার চালানোর টাকা দরকার। তাই হুমকি-ধমকি দেয়া হচ্ছে। সরকার চালানোর জন্য টাকা দরকার তাই হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
দুর্নীতির বটবৃক্ষ এই সরকার, প্রতিদিন দুর্নীতির বৃক্ষ বপন করছে।

তিনি শনিবার গাজীপুর জেলা জাতীয় পার্টির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেছেন। নগরের তেলিপাড়া এলাকার একটি কনভেনশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত এ সম্মেলনে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস ছাত্তার মিয়ার সভাপতিত্বে ও পৌর কাউন্সিলর কামরুল ইসলাম মন্ডলের পরিচালনায় প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু এমপি।
আরো বক্তব্য রাখেন প্রেসিডিয়াম সদস্য শেরিফা কাদের, রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, প্রেসিডিয়াম সদস্য জহিরুল ইসলাম, ভাইস চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান খান, উপদেষ্টা খলিলুর রহমান খলিল, ভাইস চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন মহানগর জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক শরিফুল ইসলাম। সম্মেলনে বক্তব্য শেষে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সাত্তার মিয়াকে সভাপতি ও কামরুল ইসলাম মন্ডলকে সাধারণ সম্পাদক করে গাজীপুর জেলার নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে জিএম কাদের আরো বলেন, দেশের বর্তমান অবস্থা ভালো নয়। আওয়ামী লীগের লোক ছাড়া দেশের সবাই একথার সাথে একমত হবে। সাধারণ মানুষ অনেক কষ্ট জীবন যাপন করছে। একটা ডিমও অনেক মানুষ খেতে পারছে না। এর কারণ সরকারের ভ্রান্ত নীতি আর দুর্নীতি। গ্যাস এবং বিদ্যুৎ খাতের দুর্নীতির কারণে হাজার হাজার লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা দেশের বাইরে পাচার হয়েছে।

জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে আর মানুষের আয় উপার্জন কমছে। টাকার দাম এখন অবমূল্যায়ন হচ্ছে। দেশের ডলারের সংকটের কারণে বিভিন্নভাবে আমদানি কমিয়ে আনছে সরকার। আমাদের রপ্তানি এবং বৈদেশিক আয় কমছে। সরকার রিজার্ভ ঠেকাতে পারছে না। ইনসুলিন আমদানি করতে পারছে না। ভেজাল ওষুধের কারণে বাচ্চারা মারা যাচ্ছে। সরকার দেশের অর্থনীতি ফুটো করে ফেলেছে। সেই ফুটা দিয়ে সবকিছু বের হয়ে যাচ্ছে।

আগে তারা বলেছিল দায় মুক্তি চায় না। আর এখন বিদ্যুৎ খাতে জ্বালানি খাতে দায় মুক্তির নামেই লক্ষ লক্ষ কোটি কোটি টাকা পাচার হয়েছে। দায় মুক্তি কিসের দায় মুক্তি ? অপরাধের দায়মুক্তি, চুরির দায়মুক্তি, ডাকাতির দায় মুক্তি। এর কারণে আজ দেশের মানুষ ওষুধ পায় না ফ্যাক্টরি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। ছোট ছোট কলকারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। আগে ছিল ১২ মাসে ১৩ পার্বণ। এখন চলছে ১২ মাসে ১৩০০ পার্বণ। এসব দিবস পালনের নামে আওয়ামী লীগ অপচয় করছে। লুটপাট করছে।দিবস আর দিবস। আর হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট।

তারা বলছে, পদ্মা সেতু নিজস্ব অর্থায়ন করেছেন। গরিব মানুষের অর্থ, রক্ত বিক্রি করা অর্থ থেকে যোগাড় করেছেন সেই অর্থ। ঋণ নিয়েছেন, সেই ঋণ ৫০ বছরে শোধ করতে হবে। দেশ এমন অবস্থায় পৌঁছেছে যে, এই দেশের প্রতিটি সন্তানের কাঁধে দেড় লক্ষ টাকা ঋণের বোঝা রয়েছে। সেই লোন শোধ করতে হবে।

কোটাবিরোধী আন্দোলন সম্পর্কে জিএম কাদের বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্ররা এখন কোটা বিরোধী আন্দোলন করছে। এই কোটা সিস্টেম সংবিধান বিরোধী। সংবিধান অনুযায়ী এটাকে বৈধ করার কোন উপায় নেই। তাহলে এই সরকারের কোটা দরকার কেন? বর্তমান সরকার সমাজকে বিভাজন করেছে এই সরকার। দেশকে ব্যক্তিগত এবং পারিবারিক সম্পত্তি মনে করে। নিজেদের স্বার্থে আরেকটা ডিভিশন করেছে। অনুগত প্রশাসন ও অনুগত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য এ সরকারের এই পদ্ধতি দরকার। আওয়ামী লীগের নিজস্ব লোকজনের জন্য এই জন্যই কোটা সিস্টেম রাখা হয়েছে। আমরা চাই মেধাবৃত্তিক প্রশাসন প্রতিষ্ঠা। দেশের জনগণ আওয়ামী লীগ, বিএনপির বিকল্প চায় । তাই আমাদেরকে সংগঠিত হয়ে হতে হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

সর্বশেষ

ফেসবুকে যুক্ত থাকুন

এই সম্পর্কিত আরও সংবাদ

সর্বশেষঃ