শুক্রবার, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

‌ ‘একাত্তরে সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে স্বাধীনতা পেয়েছি’

১৯৭১ সালে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নেতৃত্বে অর্জিত হয়েছে স্বাধীনতা। শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ।

আজ ২৬ শে মার্চ, ৫৩তম মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। গৌরবময় এই দিবসে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কদমতলী থানা কর্তৃক আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডঃ মোঃ আওলাদ হোসেন বলেন, বাঙালি জাতির অবিস্মরণীয় গৌরবময় দিন আজ। বীরের জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার দিন আজ। পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশ নামক একটি স্বাধীন ভূখণ্ডের জন্ম হয়েছে আজ।

কোনো দেন দরবার নয়, কারও দয়ায় নয়, ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্ত ও দুই লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জন করেছি এই স্বাধীনতা। আজ শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি বাংলাদেশের এই মহা বিজয়ের মহানায়ক সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। আজ বিনম্র শ্রদ্ধা নিবেদন করছি মহান স্বাধীনতাযুদ্ধের সকল শহীদদের প্রতি।

বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে মাতৃভাষার অধিকারের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলনের পথ বেয়ে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে জয়লাভ, ১৯৫৬ সালের সংবিধান প্রণয়ন আন্দোলন, ১৯৫৮ সালের মার্শাল ল বিরোধী আন্দোলন, ১৯৬২ সালের শিক্ষা কমিশন বিরোধী আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের ৬ দফা আন্দোলন, ১৯৬৮ সালের আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা, ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুথান, ১৯৭০ সালে ঐতিহাসিক সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরস্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন, ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ ও পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলন প্রভৃতি ঘটনা প্রবাহের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা অর্জনের চুড়ান্ত লক্ষ্যে ঐকবদ্ধ হয়ে ওঠে বাঙালি জাতি।

২৫ মার্চ দিবাগত রাতে ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে যখন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী অপারেশন সার্চলাইট নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, পুলিশ লাইনসহ ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে হত্যাযজ্ঞ শুরু করেছিল, সেই মুহূর্তে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। হানাদার বাহিনীকে প্রতিরোধ করে চুড়ান্ত বিজয়ের জন্য লড়াই চালিয়ে যেতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর সরকার গঠন এবং রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে ৩০ লক্ষ শহীদ ও দুই লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত হয় স্বাধীনতা। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেন্বর পাক সেনাদের আত্মসমর্পনের মধ্য দিয়ে চুড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দীর্ঘ ২৪ বছরের লড়াই-সংগ্রাম এবং তার নেতৃত্বে, এক সাগর রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতা, লাল-সবুজের পতাকা সংবলিত স্বাধীন-সার্ভভৌম বাংলাদেশ। বিশ্বের মানচিত্রে স্থান করে নেয় একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে।

৫২ বছর আগে আজকের এই দিনে উদয় হয়েছিল এক নতুন সূর্যের। সেদিনের সেই সূর্যের আলোয় ছিল নতুন নিদের স্বপ্ন। যে স্বপ্নে অকাতরে প্রাণ দিয়েছিল এ দেশের ৩০ লক্ষ্য মানুষ। এত বছর পূর্ণ হলেও স্বাধীনতা বিরোধীদের ষড়যন্ত্র থেমে থাকেনি। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট আমরা হারিয়েছি আমাদের মহান নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধকালে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর পক্ষালবম্বনকারী আন্তর্জাতিক শক্তি, স্বাধীনতার পর বাংলাদেশকে যারা “তলা বিহীন ঝুড়ির” দেশ বলে আখ্যায়িত করেছিল, স্বাধীনতার ৫২ বছর পরও সেই একই আন্তর্জাতিক শক্তি ও একাত্তরের পরাজিত শত্রুরা পূনরায় ষড়যন্ত্র করার চেষ্টা করছে।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাঙালি জাতি সকল ষড়যন্ত্রের বেড়াজাল ছিন্ন করে স্বাধীনতার লাল সূর্য ছিনিয়ে এনেছিল। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার হাত ধরে সারা বিশ্বে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের বিস্ময়। সারা বিশ্বের উন্নয়নের রোল মডেল।

বাংলাদেশের এ উন্নয়নের অগ্রযাত্রা অপ্রতিরোধ্য। ২০৪১ সালের মধ্যে দেশেকে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করা, এখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মূল লক্ষ্য। কোন ষড়যন্ত্রই রুখতে পারবে না বাঙালি জাতির এই অগ্রযাত্রা। ১৯৭১ এর ন্যায় সকল ধরনের ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ, এই কামনা আমাদের সবার।
মোহাম্মদ নাছিম মিয়ার সভাপতিত্বে সকাল এগারোটায় অনুষ্ঠিত এই আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন, শ্যামপুর থানা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা তোফাজ্জল হোসেন, ৫৪ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা লিয়াকত মুফতি, ঢাকা মহানগর মহিলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাকসুদা বেগম, সাংগঠনিক সম্পাদক ফেরদৌসী ইয়াসমিন পপি, ৫২ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি এডভোকেট ফারুক হোসেন, ৫৩ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাজী মহব্বত হোসেন, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সহ-সভাপতি সৈয়দ আহমেদ, ঢাকা জেলা পরিষদের সাবেক নির্বাচিত সদস্য আলমগীর হোসেন, কদমতলী থানা আওয়ামীলীগের সাবেক সদস্য মোঃ নজরুল ইসলাম, রোখসানা বেগম পারুল, শহীদ মাহমুদ হেমী, কাজী জাহিদ, কদমতলী থানা মহিলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভানেত্রী আয়েশা আলম, কদমতলী থানা পূজা কমিটির সভাপতি স্বপন দাস, প্রমুখ।

সংবাদটি শেয়ার করুন

সর্বশেষ

ফেসবুকে যুক্ত থাকুন

এই সম্পর্কিত আরও সংবাদ

সর্বশেষঃ