বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডাঃ শফিকুর রহমান বলেছেন, আমরা পরিষ্কার বলতে চাই জাতীয় ঐক্যের ভিত্তি হবে ২৪ এর গণবিপ্লব। এই গনবিপ্লবের চেতনাকে পাশ কাটিয়ে আমাদের দল এবং অন্য কোন দল যাতে ভিন্ন পথে হাঁটার চিন্তা না করে। যারাই হাঁটবেন তাদেরকেও স্বৈরাচারের রাস্তা ধরতে হবে। এজন্য আমি আমার দলকেও সতর্ক করছি, সকল রাজনৈতিক দলকে সতর্ক করছি। জনগণের চেতনার বিপক্ষে আমরা যেন কেউ না দাঁড়াই। আমাদেরকে অবশ্যই জনগণের পক্ষে শক্তভাবে দাঁড়াতে হবে। জনগণের ন্যায্য দাবিকে পাশ কাটানোর চেষ্টা বা দুঃসাহস যাতে আমরা কেউ না দেখাই। তিনি শুক্রবার সকালে গাজীপুর জেলা জামায়াতে ইসলামীর রুকন (সদস্য) সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেছেন
তিনি আরো বলেন, এজন্য আমাদের বার্তা পরিষ্কার। আমরা বলেছি, দল যার যার। দেশ আমাদের সবার। দেশের মৌলিক স্বার্থে দলগুলোর মাঝে কোন ধরনের বিভাজন এই জাতি কামনা করে না। সংকট এসেছে, সংকট আছে, সংকট আসবে। সকল জাতীয় সংকট ও ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবেই ইনশাআল্লাহ এই জাতি মোকাবেলা করবে। এর জন্য প্রয়োজন জাতির ইস্পাত কঠিন ঐক্য। রাজনীতিতে বলা হয়- ব্যক্তির চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে দেশ বড়। কিন্তু বাংলাদেশের ৫৩ বছরের ইতিহাসে এই স্লোগান রাজনীতিবিদরা প্রমাণে ব্যর্থ হয়েছে। আগামীতে আমাদের সন্তানেরা বর্তমান প্রজন্ম আর এই ব্যর্থতা দেখার জন্য প্রস্তুত নয়। তারা চায় রাজনীতির বিরুদ্ধে সফল হতেই হবে। এবং জাতির সাথে দেয়া সকল কমিটমেন্ট তাদেরকে অবশ্যই রক্ষা করতে হবে।
জামায়তের আমীর ডাঃ শফিকুর আরো বলেন, আমরা একটা মানবিক বাংলাদেশ চাই। যেই বাংলাদেশে প্রত্যেকটি নাগরিক একটি শিশু জন্ম নেওয়ার পর থেকে শুরু করে মৃত্যু পর্যন্ত প্রত্যেকটি নাগরিক অধিকার রাষ্ট্র তার হাতে তুলে দিতে বাধ্য থাকবে। একটা শিশু গরীবের সন্তান, নাকি ধনীর সন্তান এ প্রশ্ন অবান্তর। এমন একটি রাষ্ট্র আমরা দেখতে চাই, গড়তে চাই। আমরা কল্যাণকর ও মানবিক রাষ্ট্র দেখতে চাই। সে রাষ্ট্রে কেউ ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হবেনা। কারো টেলিফোনের কারণে একজন নাগরিকের জীবনের স্ট্রিম রুলার আসবেনা। কেউ ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে না। সে রাষ্ট্রের অভিযাত্রী হিসেবে আমরা দেশবাসীর সহযোগিতা চাই, দোয়া চাই এবং সবাইকে পাশে চাই।
যুবকদের যোগ্যতার বিকাশ ঘটিয়ে সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে বাংলাদেশকে একটি যোগ্য, মজবুত ও উন্নয়নের উন্নয়নের ভিত্তির উপর দাঁড় করাতে চাই। তাই যুবকদের সম্মান করতে হবে ভালোবাসতে হবে। যুবকদের হাতে সমাজের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বের চাবি তুলে দিতে হবে। আমরা তারুণ্য নির্ভর একটা সমাজ দেখতে চাই। আর তরুণদের মন মানসিকতার সাথে বয়স্ক যারা তাল মিলাতে পারবেন, তারাও তরুণ হিসেবে বিবেচিত হবেন। এই সম্মেলনে জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতা অধ্যক্ষ মোঃ ইজ্জত উল্লাহ, মাওলানা সামিউল হক ফারুকী, ডঃ মাওলানা খলিলুর রহমান মাদানী, আবুল হাশেম খান, মাওলানা দেলোয়ার হোসাইন, মহানগর জামায়াতের আমীর অধ্যাপক মুহা: জামাল উদ্দীন, নায়েবে আমীর খায়রুল হাসান, সেক্রেটারী আবু সাইদ ফারুক, জেলা সেক্রেটারী মো: সফি উদ্দিন, জেলা নায়েবে আমীর মাওলানা সেফাউল হক, জেলা সহকারী সেক্রেটারী
আনিসুর রহমান বিশ্বাস, জেলা প্রচার সম্পাদক অধ্যক্ষ মোস্তাফিজুর রহমান খান, জেলা অফিস সম্পাদক মোহাম্মদ আলী প্রমক উপস্থিত ছিলেন ও বক্তব্য রাখেন।
সম্মেলনে জামায়াতের কেন্দ্রীয় আমীর শফিকুর রহমান আরো বলেন, এমন একটা মানবিক সমাজের স্বপ্ন দেখে বাংলাদেশ জামাত ইসলাম যেই সমাজের সীমাহীন বৈষম্য থাকবে না।
এবং মানুষের অধিকারের প্রতি হস্তক্ষেপের দুঃসাহস কেউ দেখাবে না। যারা দেশ পরিচালনা করবে তারা হবে নিরেট জনগণের খাদেম। দেশ পরিচালনার দায়িত্ব যারা গ্রহণ করবেন তার আগের দিন পর্যন্ত তার যে সম্পদ ছিল দেশ পরিচালনা করে তার কার্যকাল সমাপ্তি করার পর যখন হিসাব মিলাতে বসবেন তখন যদি সম্পদের পরিমাণ ক্ষমতা হাতে নেয়ার আগে দায়িত্ব নেয়ার আগে যা ছিল তা থেকে থেকে কমে যায় তাহলে বুঝতে হবে সততার কষ্টিপাথরে তিনি উত্তীর্ণ হয়েছেন।
আগের সরকারের মন্ত্রীরা এমনকি অর্থমন্ত্রী এক সময় বলল ঘুষকে আর ঘুষ বলা ঠিক হবে না। এটাকে স্পিড মানে বলতে হবে। লজ্জা। লজ্জা।তারা ঘোষ কে এভাবে জাতীয়করণ করেছিলেন ঘোষণা দিয়ে। আরেকজন বললেন আমার মন্ত্রণালয়ে তোমরা ঘুষ খাবে কিন্তু একটু কম করে খেও। সে সময়ে আমরা বিচিত্র সংসদ এবং সরকার পেয়েছিলাম। সেই সংসদ এবং সরকার জনগণের জন্য ছিলনা। সেখানে ব্যক্তি বন্ধনায় নেচে- গেয়ে জনগণের টাকা নষ্ট করা হতো। এক ব্যক্তির ইশারায় সবকিছু উঠতো এবং বসতো। ইতিহাসে এরকম দুর্দশ শাসক যারা ছিল, স্বৈরশাসক যারা ছিল তাদের একজন বলেছিল, আমি হচ্ছি বড় রব। নাউজুবিল্লাহ। কিন্তু আমরা জানি একমাত্র রব হচ্ছেন আল্লাহ রাব্বুল আল আমিন।