বুধবার, ২৭শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ইএমই কোরের ‘কর্নেল কমান্ড্যান্ট’ হলেন লে. জেনারেল সাইফুলবাংলাদেশ সেনাবাহিনী

ছবি: আইএসপি আর

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইএমই কোরের ১১তম ‘কর্নেল কমান্ড্যান্ট’ হিসেবে অভিষিক্ত হয়েছেন কোয়ার্টার মাস্টার জেনারেল লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. সাইফুল আলম।

বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) সৈয়দপুর সেনানিবাসস্থ ইএমই সেন্টার অ্যান্ড স্কুলের প্যারেড গ্রাউন্ডে সামরিক রীতি ও ঐতিহ্য মেনে এ অভিষেক অনুষ্ঠান হয়।

অভিষেক অনুষ্ঠানে ইএমই কোরের জ্যেষ্ঠতম অধিনায়ক এবং মাস্টার ওয়ারেন্ট অফিসার বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কোয়ার্টার মাস্টার জেনারেলকে ‘কর্নেল কমান্ড্যান্ট র‌্যাংক-ব্যাজ’ পরিয়ে দেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে নবনিযুক্ত কর্নেল কমান্ড্যান্ট প্যারেড স্কয়ারে পৌঁছালে তাকে আনুষ্ঠানিক অভিবাদন জানানো হয়। এ সময় ইএমই কোরের একটি চৌকস দল তাকে ‘গার্ড অব অনার’ প্রদান করে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কোয়ার্টার মাস্টার জেনারেল ‘কর্নেল কমান্ড্যান্ট’ হিসেবে ঐতিহ্যবাহী সামরিক রীতি অনুযায়ী ইএমই কোরের অভিভাবকের দায়িত্ব গ্রহণ করলেন।

অনুষ্ঠানে নবনিযুক্ত কর্নেল কমান্ড্যান্ট উপস্থিত সবার উদ্দেশ্যে তার দিক-নির্দেশনামূলক বক্তব্য দেন। শুরুতেই তিনি স্বাধীনতার মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান।

একইসঙ্গে তিনি স্মরণ করেন মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী ইএমই কোরের বীর সেনানীসহ সব বীর মুক্তিযোদ্ধাদের। এ সময় তিনি সেনাবাহিনীর রীতি-নীতির প্রতি শ্রদ্ধা রেখে দৃঢ়তা, পেশাগত দক্ষতা এবং সর্বোপরি দলগত প্রচেষ্টার মাধ্যমে দেশ ও জাতি গঠনে যেকোনো দায়িত্ব পালনে ইএমই কোরের সব সদস্যদের নিরলস প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার নির্দেশনা দেন।

অনুষ্ঠানে ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তা, অন্যান্য অফিসার, জুনিয়র কমিশন্ড অফিসার, অন্যান্য পদবির সেনাসদস্য এবং গণমাধ্যম ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

লে. জেনারেল মো. সাইফুল আলম ১৯৮৬ সালের ২৭ জুন ১৪তম দীর্ঘ মেয়াদী কোর্সের সঙ্গে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি হতে পদাতিক কোরে কমিশন লাভ করেন। তিনি ২০২১ সালের ২৯ জুলাই বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কোয়ার্টার মাস্টার জেনারেল হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।

বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে প্রশিক্ষণ শেষে তিনি তার কোর্সের শ্রেষ্ঠ অলরাউন্ড ক্যাডেট হিসেবে বিবেচিত হয়ে ‘Sword of Honour’ এবং শ্রেষ্ঠ একাডেমিক পারফরম্যান্সের জন্য ‘BMA Gold Medal’ অর্জন করেন। এছাড়া তিনি রণকৌশলগত প্রশিক্ষণে উৎকর্ষতার জন্য ‘Tactics Plaque’ অর্জন করেন।

লে. জেনারেল মো. সাইফুল আলম ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ থেকে ডিফেন্স স্টাডিজে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জনের পাশাপাশি মালয়া ইউনিভার্সিটি, মালয়েশিয়া থেকে স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ডিফেন্স স্টাডিজে ডিপ্লোমা, রয়্যাল ইউনিভার্সিটি থেকে মাস্টার্স ইন বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন এবং যুক্তরাষ্ট্রের আর্মি ওয়ার কলেজ থেকে স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের উপর মাস্টার্স ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। তিনি বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস থেকে সিকিউরিটি অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের ওপর পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।

সাইফুল আলম দীর্ঘ ৩৮ বছরের বর্ণাঢ্য পেশাগত জীবনে সব স্তরের কমান্ড, স্টাফ ও প্রশিক্ষকসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি দুটি পদাতিক ব্যাটালিয়ন, একটি পদাতিক ব্রিগেড এবং দুটি পদাতিক ডিভিশন কমান্ড করেন। তিনি নবগঠিত ৭ পদাতিক ডিভিশনের প্রতিষ্ঠাতা জিওসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করার পাশাপাশি ১১ পদাতিক ডিভিশনও কমান্ড করেন।

লে. জেনারেল মো. সাইফুল আলম বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সর্বোৎকৃষ্ট দুটি প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান স্কুল অব ইনফ্যান্ট্রি অ্যান্ড ট্যাকটিকস এবং বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমির কমান্ড্যান্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের মহাপরিচালক হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন তিনি।

ব্যক্তিগত জীবনে লে. জেনারেল মো. সাইফুল আলম এবং তার সহধর্মিণী বেগম লুবনা আফরোজ দুই কন্যা সন্তানের জনক-জননী।

সংবাদটি শেয়ার করুন

সর্বশেষ

ফেসবুকে যুক্ত থাকুন

এই সম্পর্কিত আরও সংবাদ

সর্বশেষঃ