জুয়ার আসরে ক্ষমতাসীন দলের এক প্রভাবশালী ইউপি চেয়ারম্যানের টাকা দিয়ে জুয়াড়ীদের সাথে তিন তাস খেলার দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। এতে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগ বিব্রত এবং সুধীজনরা তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। তবে এ নিয়ে উপজেলা প্রশাসনের বক্তব্য তাকে ডেকে সংশোধনের জন্য বলা হয়েছে।
সূত্র জানায়, পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার চম্পাপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ রিন্টু তালুকদার তার নিজ বাড়িতে প্রতিদিন রাতে জুয়ার আসর বসান। এবং তিনি নিজেও টাকা দিয়ে জুয়াড়ীদের সাথে তিন তাস খেলেন।
স্থানীয় শিক্ষিত যুবক সহ পেশাদার জুয়াড়ীরা তার জুয়ার আসরে নিয়মিত জুয়া খেলছেন। মাঝেমধ্যে জুয়ার আসরে চলে মদ ও নারীর অসামাজিক কর্মকান্ড। এতে গ্রামীণ জনপদে ছড়িয়ে পড়ছে সামাজিক অবক্ষয়।
স্থানীয়রা এ নিয়ে নিজেদের মধ্যে কানাঘুষা করলেও প্রকাশ্যে ভয়ে মুখ খুলতে পারছে না কেউ। চেয়ারম্যানের এ জুয়া খেলার দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় নড়ে চড়ে বসেন ইউপি চেয়ারম্যান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একটি সূত্র জানায়, ইউপি চেয়ারম্যান রিন্টু তালুকদারের স্ত্রী ছেলের পড়াশুনার কারণে বরিশালে অবস্থান করছেন। এ সুযোগে চেয়ারম্যান ফাঁকা বাড়িতে মশগুল থাকেন জুয়া খেলা সহ অসামাজিক কর্মকান্ডে। এলাকার উন্নয়ন ও জনসেবার প্রতি তার আদৌ কোন ভ্রুক্ষেপ নেই। যা চম্পাপুর ইউনিয়নে গেলেই এর প্রমাণ মিলবে।
যুবলীগ চম্পাপুর ইউনিয়নের সভাপতি বশির তালুকদার বলেন,’ চেয়ারম্যানের এভাবে প্রকাশ্যে জুয়া খেলায় আমরা ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা বিব্রত। এ নিয়ে আমাদের আর কি বলার আছে, স্থানীয়রা যা বলাবলি করছে তা ভাষায় প্রকাশ অযোগ্য।’ তবে এ নিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের কোন নেতা গণমাধ্যমে কথা বলতে রাজি হননি।
নাগরিক উদ্যোগ, কলাপাড়া উপজেলা আহ্বায়ক নাসির তালুকদার বলেন,’ জুয়া, মদ সহ অসামাজিক কর্মকান্ড সমাজ কে সংক্রমিত করে। সমাজের শান্তি শৃঙ্খলা বজায় থাকার ক্ষেত্রে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়।’
চম্পাপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ রিন্টু তালুকদার বলেন,’ এটি আমার ১২ বছর আগের ছবি। যখন আমি ইউপি চেয়ারম্যান হইনি। আমার চাচাতো ভাইয়েরা এই ছবি ফেসবুকে পোস্ট করেছে। আমি কখনও মদ খাইনা এবং জুয়া খেলি না। তবে পাখি শিকার ও তাস খেলা পছন্দ করি।’
কলাপাড়া ইউএনও শঙ্কর চন্দ্র বৈদ্য বলেন, ‘ফেসবুকে দেখার পর চেয়ারম্যান রিন্টু তালুকদারকে ডেকে সংশোধনের জন্য বলা হয়েছে।’