বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মিঃ পিটার ডি হাস সোমবার (২০ মার্চ) বিকেলে আহমদীয়া মুসলিম জামা’ত বাংলাদেশের জাতীয় কেন্দ্র ৪, বকশিবাজার রোড ঢাকা পরিদর্শন করেছেন।
তিনি মূলতঃ সম্প্রতি পঞ্চগড়ে ঘটে যাওয়া আহমদীদের উপর বর্বরোচিত আক্রমণের প্রেক্ষিতে সমবেদনা জ্ঞাপন এবং উদ্ভুত ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য এবং এবিষয়ে আহমদীয়া মুসলিম জামা’তের প্রতিক্রিয়া জানতে চান।
আহমদীয়া মুসলিম জামা’ত নেতৃবৃন্দ বলেন, আহমদীয়া বিরোধী আন্দোলন মূলতঃ বাংলাদেশ বিরোধী ষড়যন্ত্র। মৌলবাদী রাষ্ট্র পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ধর্মনিরপেক্ষতা এবং অসাম্প্রদায়িকতার আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে বাংলাদেশ সসস্ত্র যুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জন করে। এই দেশকে পুণরায় পাকিস্তানী ভাবধারায় ফিরিয়ে নেয়ার উদ্দেশ্যে দেশী ও বিদেশী চক্র দেশকে অস্থিতিশীল করার কাজে লিপ্ত রয়েছে।
আহমদীয়া নেতৃবৃন্দ বলেন, ১৯৭৪ সালে ধর্মান্ধ ও রাজনৈতিক মৌলবাদীদের চক্রান্তে এবং তাদের সমর্থনে ক্ষমতায় টিকে থাকার উদ্দেশ্যে ভূট্টো সরকার পাকিস্তানে আহমদীদের রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষনা করে। কিন্তু তার পর বেশীদিন ভূট্টো ক্ষমতায় থাকতে পারেন নি, আর যারা তাকে আহমদীদের অমুসলিম ঘোষনা দিতে প্ররোচিত করেছিলো তারাও ভূট্টোকে ছেড়ে চলে যায়। আর তার পর থেকেই পাকিস্তানের অধপতন শুরু হয়। টানা সাম্প্রদায়িক কোন্দলে পাকিস্তান আজ ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। অতএব, বাংলাদেশের জনগণ এবং রাজনীতিকদের এ থেকে শিক্ষা নেয়া উচিত। ইতিহাস শিক্ষা দেয় যে, ধর্মব্যবসায়ীরা কখনোই তাদের ওয়াদা রক্ষা করে না।
রাষ্ট্রদূত খুব শিঘ্রই পঞ্চগড়ের আহমদীদের অবস্থা সরেজমিনে দেখতে যাওয়ার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেন।
তার আগে মাননীয় রাষ্ট্রদূত আহমদীয়া মুসলিম জামা’ত কর্তৃক ৭৫টি ভাষায় প্রকাশিত পবিত্র কুরআন মজিদের একটি দূর্লভ প্রদর্শনী দেখেন এবং মন্তব্য খাতায় অভিমত ব্যক্ত করেন।
আলোচনায় দূতাবাসের পক্ষে রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস, মানবাধিকার সংক্রান্ত অফিসার মিস সোফিয়া মিউলেনবার্গ এবং কামরুল এইচ খান এবং আহমদীয়া মুসলিম জামা’তের পক্ষে ন্যাশন্যাল আমীর মাওলানা আব্দুল আউয়াল খান চৌধুরী, নায়েব ন্যাশন্যাল আমীর প্রবীন স্থপতি প্রফেসর মীর মোবাশ্বের আলী এবং বহিঃসম্পর্ক, গণযোগাযোগ, প্রেস ও মিডিয়া বিভাগের প্রধান আহমদ তবশির চৌধুরী অংশগ্রহণ করেন।