কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সৃষ্ট চলমান পরিস্থিতি অনুধাবন করে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধান করতে হবে। তাছাড়া আন্দোলনকে ঘিরে বিভিন্ন মিডিয়া ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব প্রতিরোধের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন বিশিষ্টজনরা।
শনিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে সম্প্রীতির বাংলাদেশ আয়োজিত ‘সন্ত্রাস-সংঘাত-সহিংসতা নয়, চাই শান্তি-সম্প্রীতির বাংলাদেশ’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন বিশিষ্টজনরা।
সম্প্রীতির বাংলাদেশ’র আহ্বায়ক পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীলের সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য দেন সম্প্রীতি বাংলাদেশের যুগ্ম আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ আলী শিকদার, বাংলাদেশ পুজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাসু দেব ধর, দৈনিক প্রতিদিনের বাংলাদেশের সম্পাদক মুস্তাফিজ শফি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক ড. চন্দ্রনাথ পোদ্দার, ঢাকার আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারের প্রধান ভান্তে বুদ্ধানন্দ মহাথেরো, খ্রিস্টান ধর্মযাজক রেভারেন্ড মার্টিন অধিকারী, শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. ইউসুফ রাজ, বঙ্গবন্ধু গবেষক মেজর (অব.) আফিজুর রহমান, দৈনিক আলোর ঠিকানা এর সম্পদাক সিদ্দিকুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান নির্মাতা সাইফ আহমেদ, বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান সংবাদকর্মী মুনিরুল ইসলাম ও বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান সোলায়মান মিয়া প্রমুখ।
মেজর জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ আলী শিকদার বলেন, কোটা আন্দোলনে আমরা যা দেখলাম, তার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত ছিলাম না। আমরা কোনোভাবে সহিংসতা চাই না। এর মধ্যে যে প্রাণহানি ঘটেছে, সবার প্রতি সমবেদনা জানাই। বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই, যারা রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস করেছে, সেগুলো কোনো মিডিয়ায় আসে না। বাংলাদেশের কোনো মানুষ এই কাজ করতে পারে না। এটা কোনো মন্ত্রীর সম্পদ নয়, আমাদের পদ্মা সেতু মেট্রোরেল বাংলাদেশকে মর্যাদা দিয়েছে। আন্দোলনকে ঘিরে ওঠা বিভিন্ন গুজবকে পত্রিকায় সত্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে। হেলিকপ্টার থেকে গুলি করার কারণে মানুষের বাসায় কারো গায়ে গুলি লেগেছে- এই কথাটা বিশেষ করে ছড়িয়ে পড়েছে। মানুষ বিশ্বাস করেছে। বাংলাদেশ ও রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে গুজব ছড়িয়ে উসকে দেওয়া হচ্ছে। পৃথিবীর সব ধর্মেই শান্তির কথা বলা হয়েছে। ছাত্রদের যৌক্তিক আন্দোলকে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
প্রতিদিনের বাংলাদেশের সম্পাদক মোস্তাফিজ সফি বলেন, অনেক গণমাধ্যম না বুঝে গুজবকে সত্য বলে প্রচার করছে। আমাদের যে হাজার হাজার সাইবার যোদ্ধা তৈরি করা হয়েছিল, তারা আজ কোথায়- এ প্রশ্নও তোলেন তিনি।
আলোচনা সভায় সম্প্রীতি বাংলাদেশের সদস্য ও সাংবাদিক আলী হাবিব ও ফরহাদ মাহমুদের লেখা মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংগঠনের আহ্বায়ক পীযূষ বন্দোপধ্যায়।
সভাপতির বক্তৃতায় পিযূষ বন্দোপাধ্যায় বলেন, বর্তমান সময়টা সুখকর নয়। গত ৫০ বছর বাংলাদেশকে ভালোবেসে যারা লড়াই করে গেছেন তারা কোনো সংকটে ভয় পায় না। কাজেই এই আঘাত থাকবে না। আমাদের সেই বিশ্বাস আছে। আমরা রাজনীতিকে সৎ পথে ডাকতে চাই।