শনিবার, ২১শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

আরবে বাজপাখি বিক্রি হয় ৪৫ লাখ টাকায়!

৪৫ লাখ টাকারও বেশি দামে বিক্রি হয়েছে এক জোড়া বাজ পাখি। সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াধের পেরিগ্রিন ফ্যাল্কন জাতের এই পাখি নিলামে বিক্রি হয়েছে। বাজ গোত্রের পাখিদের মধ্যে সব থেকে বেশি হিংস্র পেরিগ্রিন ফ্যাল্কন। এদের নখ খুবই তীক্ষ্ণ তলোয়ারের ফলার মতো। ওড়ার গতি ঘণ্টায় প্রায় ৩২০ কিলোমিটার। যা স্থলচর দ্রুতগতি সম্পন্ন প্রাণী চিতার থেকেও কয়েকশো গুণ বেশি।

জল-স্থল-বায়ুর মধ্যে সর্বাধিক দ্রুতগামী এই পাখির যেমন রয়েছে অবিশ্বাস্য গতি তেমনি রয়েছে শিকার ধরার ব্যতিক্রমী কৌশল। দুর্দান্ত গতিময়তা থাকায় তারা শিকারে অনেক বেশি পটূ। নিজের তুলনায় ছোট আকৃতির কোন পাখির নাগাল পেলে সহজে ছেড়ে দেয়না এরা। সঙ্গে সঙ্গে পিছু নিয়ে ধরে ফেলে উড়ন্ত অবস্থায়। উপর থেকে ডাইভের সময় সে নিজের শরীরটিকে তীরের ফলার মত বানিয়ে ফেলে। ফলে স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি গতিবেগ ও অর্জিত হয়।

ডানার প্রচণ্ড গতি ও শিকার ধরার বিশেষ কৌশলের কারণে এই পাখিটিকে সব মহাদেশে অত্যন্ত দাপটের সাথে রাখত্ব করতে দেখা যায়। এই প্রজাতির পাখির গড় দৈর্ঘ হয় ৩৪-৫৮ সেন্টিমিটার, প্রসারিত ডানা ৭৪ থেকে ১২০ সেন্টিমিটার, মাথা ও ঘাড় হয় কালো। থুতনি-গলা ও বুক রেখাহীন, ঘাড়ের পাশে থাকা সাদা ছোপ। পেট লালচে বাদামী। পেট থেকে উরুর উপর পর্যন্ত থাকে কালচে মিহি সারি। বঁড়শির মতো বাঁকান ঠোঁটের গোড়া হলদেটে রঙয়ের। চোখের চারপাশ এবং পায়ের বর্ণ হলুদ।

অল্প বয়সী পাখির বর্ণ একটু ভিন্ন ধাঁচের। তাদের উপরের দিকটা বাদামী আর নিচের দিক সাদা। নদী, পাহাড়, জলাভূমি ও বনে এরা অবস্থান করে। ভোরে এবং গোধূলিতে বেশি কর্মচঞ্চল থাকে। এদের প্রধান খাবার ছোট পাখি। উড়ন্ত অবস্থায়ই ছোট পাখি শিকার করে। অথবা জলাশয়ে বিচরণকারী পাখি শিকার করে।

বাঁকানো-ধারাল দাঁত ও তীক্ষ্ণ নখ দিতে শিকারকে মুহুর্তেই ছিন্নভিন্ন করে ফেলতে পারে এই পাখি। বিশেষ করে বালি হাঁস, পানকৌরি এদের শিকারে পরিণত হয় বেশি, এমনকি বাদ যায়না স্তন্যপায়ী বাদুড়ও। অনায়াসে ২ কিলোমিটার দূর থেকে পায়রার মত ছোট-খাটো শিকারের দিকে ধাবিত হতে পারে এরা। প্রচণ্ড বেগে ধেয়ে আসায় দ্রুত গতির ধাক্কায় শিকারের ঘাড় মুহুর্তে ভেঙে যায়। মার্চ থেকে মে পর্যন্ত ওদের প্রজনন কাল। সারা পর্বতের গায়ে অথবা গাছের উঁচু ডালে বাসা বাঁধে পেরিগ্রিন ফ্যাল্কন। বাসা বানাতে উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করে সরু ডালপালা। ডিম পাড়ে ৩ থেকে ৪ টি, যা ফুঁটতে সময় লাগে ২৯-৩২ দিন। এই পর্যন্ত পেরিগ্রিন ফ্যাল্কনের ১৯ টি উপপ্রজাতির সন্ধান পাওয়া গেছে।

অ্যান্টার্টিকা ছাড়া পৃথিবীর সব মহাদেশে দেখা যায় এদের। প্রজননের সময় এরা বছরের প্রায় ২০,০০০ মাইল পরিভমণ করে। প্রজাতিটি আমাদের দেশেও বিরল পরিযায়ী পাখি। শুধু প্রচণ্ড শীতে দেখা মেলে তাদের। দেশের উপকূলীও এলাকায় এর অবস্থান সবচেয়ে বেশি। এসব একালায় সৈকতে থাকে পাখির অবাধ বিচরণ।

সংবাদটি শেয়ার করুন

সর্বশেষ

ফেসবুকে যুক্ত থাকুন

এই সম্পর্কিত আরও সংবাদ

সর্বশেষঃ