শুক্রবার, ২৭শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

আরবের সাথে মিল রেখে চট্টগ্রামে অর্ধ শতাধিক গ্রামে ঈদ বুধবার

আরব দেশের সাথে মিল রেখে দক্ষিণ চট্টগ্রামের পটিয়াসহ অর্ধ শতাধিক গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ আগামীকাল বুধবার (১০ এপ্রিল) পবিত্র ঈদ উল ফিতর উদযাপন করবে।

প্রতিবারের মতো সাতকানিয়ার মির্জাখীল দরবার শরীফের মুরিদরা আরব দেশের সঙ্গে মিল রেখে এবারও একদিন আগে ঈদ উদযাপন করবে। দরবার শরীফের এসব মুরিদরা আরব দেশের সাথে সঙ্গতি রেখে একদিন আগে থেকে রোজা পালনও শুরু করেছিলেন।

এদিকে, চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থানে থাকা মির্জাখীল দরবার শরীফের অনেক মুরিদরা ঈদের নামাজ আদায়ের জন্য আগামীকাল বুধবার দরবার শরীফে চলে আসবেন। বুধবার সকাল ১০টায় মির্জাখীল দরবার শরীফের মাঠে পবিত্র ঈদ উল ফিতরের নামাজ আদায় করবেন তারা। দরবার শরীফের পীর মাওলানা মোহাম্মদ আরেফুল হাইয়ের বড় ছেলে ড. মুফতি মাওলানা মোহাম্মদ মকছুদুর রহমান ঈদের নামাজে ইমামতি করবেন বলে জানা গেছে।

মির্জাখীল দরবার শরীফ সূত্র জানা যায়, সাতকানিয়ার মির্জাখীল, গাটিয়াডেঙ্গা, মাদার্শা, পুরানগড়, মৈশামুড়া, চরতি, চন্দনাইশের কাঞ্চননগর, হারালা, বাইনজুরি, কানাই মাদারি, সাতবাড়িয়া, বরকল, দোহাজারী, জামিজুরি, বাঁশখালীর কালিপুর, চাম্বল, শেখেরখীল, ডোংরা, ছনুয়া, আনোয়ারার বরুমছড়া, তৈলারদ্বীপ, লোহাগাড়ার পুটিবিলা, কলাউজান, বড়হাতিয়া, পটিয়া, বোয়ালখালী গ্রামের মানুষ বুধবার পবিত্র ঈদ উল ফিতর উদযাপন করবেন।

এছাড়াও পার্বত্য জেলা বান্দরবানের লামা, আলীকদম, নাইক্ষ্যংছড়ি, কক্সবাজারের চকরিয়া, টেকনাফ, মহেশখালী ও কুতুবদিয়ার বেশ কিছু গ্রামের কিছুসংখ্যক লোক একই দিনে ঈদের নামাজ আদায় করবেন বলে জানা গেছে।

অপরদিকে, এ দরবার শরীফের ভক্তরা কোনো কোনো এলাকায় পৃথকভাবে ঈদের নামাজের আয়োজন করেছেন। দক্ষিণ চট্টগ্রাম ছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে কিছু মুরিদ ঈদের নামাজ আদায়ের জন্য সাতকানিয়ার মির্জাখীল গিয়ে দরবার শরীফে ছুটে আসবেন। তারা ঈদের নামাজ শেষ করে আবার বাড়ি চলে যাবেন।

দরবার শরীফের মাওলানা আবদুর রহমান বলেন, আমরা সৌদি আরবের দিনক্ষণ অনুসরণ করি। দীর্ঘদিন ধরে সেই অনুযায়ী রোজা ও ঈদসহ অন্যান্য ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করে আসছি। এবারও সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে আগামীকাল বুধবার পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করা হবে। সকাল ১০টায় দরবার শরিফ ময়দানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। ঈদের প্রধান নামাজের ইমামতি করেন ড. মাওলানা মোহাম্মদ মকছুদুর রহমান।

তিনি আরো বলেন, প্রায় দুই শতাধিক বছরের অধিক সময় ধরে মির্জাখীল দরবার শরীফের মুরিদরা আরব দেশের সঙ্গে মিল রেখে একদিন আগে রোজা পালন ও ঈদ উদযাপন করেন। যেসব এলাকায় দরবার শরীফের মুরিদ বেশি রয়েছে তারা নিজ নিজ এলাকায় ঈদের নামাজ আদায় করবেন। আর যেখানে দরবার শরীফের ভক্ত কম তারা বুধবার সকালে সাতকানিয়ার মির্জাখীল দরবার শরীফে এসে ঈদের নামাজ আদায় করবেন।

মির্জাখীল দরবার শরীফের মোহাম্মদ মছউদুর রহমান বলেন, আমরা হানাফী মাযহাবের অনুসারী হিসেবে আমাদের নিকটবর্তী সময়ের কম ব্যবধান এবং আমাদের পূর্বের দেশসমুহে চন্দ্র দর্শন বিবেচনায়, বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ হতে চাঁদের অবস্থান এবং মক্কা ও মদীনা শরীফে তথা আরব বিশ্বের চাঁদ দেখার খবর বিভিন্ন দেশি-বিদেশি ইলেকট্রনিক, প্রিন্ট মিডিয়ার মাধ্যমে জ্ঞাত হয়ে আগামীকাল বুধবার আমরা এবং সারা দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়া আমাদের অনুসারীরা ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায়ের মধ্য দিয়ে ঈদ উদযাপন করবে।

অন্যদিকে, বাংলাদের প্রচলিত নিয়মের আগে ঈদ উদযাপনকারীদের অধিকাংশই দক্ষিণ চট্টগ্রামের সাতকানিয়া ও পটিয়া, আনোয়ারা, বাশখালী এবং চন্দনাইশ উপজেলার হলেও তাদের সঙ্গে মিলে সারা দেশের আরো অনেক জায়গায় একদিন আগে ঈদুল ফিতর উদযাপন করবেন।

উল্লেখ্য, হানাফি মাজহাব মতে বিশ্বের যে কোনো দেশে চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে ঈদ, রোজাসহ সকল ধর্মীয় অসুশসন পালন করে আসছেন প্রায় ২০০ বছর আগে তৎকালীন পীর মাওলানা মুখলেছুর রহমান। একদিন আগে অর্থাৎ পৃথিবীর অন্য যেকোনো দেশে চাঁদ দেখা গেলেই রোজা, ঈদ এবং কোরবানি পালনের নিয়ম প্রবর্তন করেন তিনি। এরপর থেকেই সারা দেশে মির্জাখীল দরবারের অনুসারীরা এ নিয়ম পালন করে আসছেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

সর্বশেষ

ফেসবুকে যুক্ত থাকুন

এই সম্পর্কিত আরও সংবাদ

সর্বশেষঃ