সোমবার, ৩০শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

আমতলীতে বিএডিসির বীজ সিন্ডেকেট, ৬৭০ টাকার বীজ ধান ৭’শ ৫০ টাকা বিক্রি!

আমতলী উপজেলায় আমনের সরকারী বিএডিসির (বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন) বিআর-৪৯ ও বিআর-২৩ ধানের বীজ উত্তর সোনাখালী গ্রামের মধু প্যাদা নামের এক ডিলার সিন্ডিকেট করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগ রয়েছে তিনি নিয়ননীতি উপেক্ষা করে মধু প্যাদা বরিশাল ফরিদ মিয়া নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে বীজ এনে তার গোডাউনে মজুদ করে কৃত্রিম সংঙ্কট তৈরি করেছেন। ওই বীজ তিনি আমতলী, তালতলী, রাঙ্গাবালি ও কলাপাড়া উপজেলার বিভিন্ন দোকানে অতিরিক্ত দামে বিক্রি করছেন। আরো অভিযোগ রয়েছে, গত বছর ডিলার মধু প্যাদার ক্রয়কৃত বীজে ধান হয়নি। এ নিয়ে কৃষকরা আমতলী উপজেলার গুলিশাখালী ও তালতলী উপজেলার কচুপাত্রা বাজারে মানববন্ধন করেছেন। এ বছরও তিনি একইভাবে বীজ ক্রয় করছেন। দ্রুত মধু প্যাদার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানিয়েছেন কৃষকরা।

উপজেলার আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নের বিএডিসি ডিলার হুমায়ুন ঢালী বলেন, মধু প্যাদা দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বিএডিসির অনুমোদন ছাড়া ধান সংগ্রহ করছে। ওই ধান তিনি আমতলী, তালতলী, রাঙ্গাবালি ও কলাপাড়া উপজেলাসহ বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করেন। তিনি আরো বলেন, মধু প্যাদার সংগ্রহ করা ধান মুদি মনোহরী, কসমেটিক্স, গার্মেন্টেস’র দোকানেও যাওয়া যায়। ওই বীজ দোকানে অতিরিক্ত দামে বিক্রি হচ্ছে। প্রশাসন তদন্ত করলেই বেড়িয়ে আসবে তার অনিয়মের চিত্র। তার বিরুদ্ধে বরিশাল বিএডিসি অফিসের ডিডির কাছে অভিযোগ দিয়েছি কিন্তু কোন ব্যবস্থা নেয়নি তিনি। তিনি আরো বলেন, আমরা ডিলার হয়ে ধান লোকসানে বিক্রি করি কিন্তু মধু প্যাদার বীজ দোকানে অতিরিক্ত দামে বিক্রি করছে।

জানাগেছে, আমতলী উপজেলায় এ বছর আমন চাষাবাদের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে ২৩ হাজার ৫০০ হেক্টর জমি। ওই জমির আবাদের জন্য বীজ ধান প্রয়োজন ৫’শ ৮০ মেট্রিক টন। এর মধ্যে ৯৫% কৃষক ফলন ভালো হওয়ায় বিআর-৪৯, বিআর -২৩ জাতের বীজ ধানের চাষাবাদ করে থাকেন। পটুয়াখালী বিএডিসি কর্তৃপক্ষ এ বছর আমতলী উপজেলায় ৫৫ মেট্রিক টন আমনের বীজ ধান সরবরাহ করেছেন। যা প্রয়োজনের তুলনায় নগন্য। এতে বীজ সংকটে পরেছে উপজেলার কৃষকরা।

সোমবার উপজেলার ডিলার ও বীজের দোকানে বিআর – ৪৯ ও বিআর-২৩ জাতের ধানের বীজ পাওয়া যাচ্ছে না। বীজ না পেয়ে দিশেহারা হয়ে পরেছে তারা (কৃষকরা)। কিছু ধান পাওয়া গেলেও তা অতিরিক্ত দামে বিক্রি হচ্ছে। বিআর-৪৯ ও বিআর-২৩ ধানের বীজ ৬৭০ টাকার বীজ ৭৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

অভিযোগ রয়েছে ডিলার মোঃ মধু প্যাদা মেসার্স রেজবি এন্টার প্রাইজ ও মেসার্স সোনালী বীজ ভান্ডার নামের দুইটি প্রতিষ্ঠানের নামে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে অনুমোদন ছাড়া বিএডিসির বীজ ক্রয় করে অতিরিক্ত দামে বিক্রি করছেন। আরো অভিযোগ রয়েছে মধু প্যাদা গত ২৫ দিনে ৬০ মেট্রিকটন বিএডিসির বীজ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া বরিশাল ফরিদ মিয়া নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে ক্রয় করে আমতলী উপজেলার মহিষকাটা বাজারের তার তিনটি গোডাউনে মজুদ করেছেন। ওই বীজ তিনি কৃত্রিম সংঙ্কট তৈরি করে বেশী দামে আমতলী, তালতলী, রাঙ্গাবালি ও কলাপাড়া উপজেলার বিভিন্ন দোকানে বিক্রি করছেন বলে জানান কৃষক নজরুল ইসলাম।

রায়বালা গ্রামের জুয়েল হাওলাদার বলেন, ১০ কেজির বিআর-২৩ ধানের একটি বস্তা দোকান থেকে ৭৫০ টাকায় ক্রয় করেছি।

সংবাদটি শেয়ার করুন

সর্বশেষ

ফেসবুকে যুক্ত থাকুন

এই সম্পর্কিত আরও সংবাদ

সর্বশেষঃ