যশোর জেলার নাভারণ থেকে সাতক্ষীরা জেলার বিভিন্ন অঞ্চল মধ্য দিয়ে ছয় লেনের একটি মহাসড়ক নির্মাণ হবে । এ বিষয়টি এই অঞ্চলের মানুষের মধ্যে বেশ আলোচনা জন্ম দিয়েছে। কলারোয়া উপজেলার কেরেলকাতা ইউনিয়নের বেলতলা, কাজিরহাট ব্রজবাক্সসা, কলারোয়া পৌর সদরের ডায়াবেটিস হাসপাতাল থেকে মাঠের মধ্য দিয়ে মাধবকাটি গিয়ে যুক্ত হবে এবং সেখান থেকে ভোমরা পর্যন্ত রাস্তাটি উন্নীতকরণ করা হবে । এ কাজের অগ্রগতি হিসেবে ইতিমধ্যে রাস্তার মাপ অনেকটা শেষের পথে জমি অধিগ্রহণ নিয়ে চলছে পরিকল্পনা ।
তবে বুধবার ( ২৪ এপ্রিল ) দুপুরে সাতক্ষীরার কলারোয়া পৌরসভা হলরুমে বিশ্ব ব্যাংক থেকে একটি টিম জনসাধারণের মতামত জানতে এসেছিলেন যে, এই জনপদে মহাসড়ক নির্মাণ করতে গিয়ে মানুষের উপকার ছাড়া কোন একজন ব্যক্তিরও যেন কোন ক্ষতি না হয় সেই লক্ষ্যে এই অঞ্চলের মানুষ আসলে কি চায় ৬ লেনের নতুন বাইপাস সড়ক নির্মাণ নাকি যে মহাসড়কটি রয়েছে সেখান দিয়েই রাস্তাটি নির্মাণ করা হবে ! এ অঞ্চলের মানুষের সুবিধা হবে কোনটাই! এমন নানা বিষয় নিয়ে সুশীল সমাজের নাগরিক, শিক্ষক, সাধারণ মানুষ, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক সহ বিভিন্ন পর্যায়ের উপস্থিত থাকা মানুষের কাছ থেকে মতামত গ্রহণ করেছেন।
এই অনুষ্ঠানটির সার্বিকভাবে সহযোগিতা ও বাস্তবায়নে নেতৃত্ব দিয়েছেন কলারোয়া পৌরসভার মেয়র মাস্টার মনিরুজ্জামান বুলবুল।
কলারোয়া সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর আবু নছর বলেন, এই এলাকার মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়ন করতে গেলে যাতায়াত ব্যবস্থার উন্নতিকরণ অত্যন্ত প্রয়োজন সেক্ষেত্রে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য বাইপাস সড়ক নির্মাণ সবথেকে যুক্তিসঙ্গত। সেই সাথে বর্তমান মহাসড়কটি দুই লেনে উন্নতিকরণ ও সংস্কার প্রয়োজন।
কলারোয়া পাবলিক ইনস্টিটিউটের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট শেখ কামাল রেজা বলেন, উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার অভাবে সারা দেশের সাথে সাতক্ষীরার সুন্দরবন অঞ্চল সহ জেলার বিভিন্ন উপজেলার শ্রমজীবী কৃষক ব্যবসায়ী সহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ অনেক আর্থসামাজিক উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত। এজন্য বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা চিন্তা করে অবশ্যই ৬ লেনের বাইপাস সড়কসহ একটি মহাসড়ক হওয়া জরুরী।
উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি শেখ আশিকুর রহমান মুন্না বলেন, যে সড়কটি হতে যাচ্ছে যার সুন্দর একটি পরিকল্পনা করা হয়েছে তা যেন দীর্ঘদিন অবহেলায় অপেক্ষায় পড়ে থাকে না । অতি দ্রুত যাতে এই কাজের বাস্তবায়ন ঘটে এজন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।
কলারোয়া পৌরসভার মেয়র মাস্টার মনিরুজ্জামান বুলবুল বলেন, ভবিষ্যতের ভয়াবহ যানজট নিরসন ও অর্থনৈতিক জোন বাস্তবায়ন, রাজধানী সহ বিভিন্ন জেলার সাথে এ অঞ্চলের মানুষের ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নয়ন, জলাবদ্ধতা দূর করণ করতে গেলে অবশ্যই এই জনপদে রাস্তার পাশ দিয়ে ড্রেনেজ ব্যবস্থা সহ একটি ৬ লেনের বাইপাস সড়ক ও একটি মহাসড়ক খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য এই সড়কের কাজটি অতি দ্রুত বাস্তবায়নের এজন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী বিভাগ ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে তিনি আহ্বান করেন।
বিশ্ব ব্যাংকের এই প্রতিনিধির দলের প্রধান মোঃ আসাদুজ্জামান চৌধুরী বলেন, বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে এই অঞ্চলের যে সড়কটি হতে যাচ্ছে এখানে লেবার ও শ্রমিক হিসেবে দেশের নারী ও পুরুষেরা কাজের সুযোগ পাবে এবং বিদেশী ঠিকাদার কাজ করবে। তবে এই অঞ্চলের কোন একজন ব্যক্তিকেও ক্ষতিগ্রস্ত করে কোন কাজ করা হবে না বরং বর্তমান বাজারদর হিসেবে জমি অধিগ্রহনসহ সকলের উন্নয়ন ও সুফলের জন্যই কাজ করা হবে। এমনকি যে অঞ্চল দিয়ে জমি অধিগ্রহন করা হবে সেই অঞ্চলের যদি একটি দোকান থাকে আর ওই দোকানে যদি কোন কর্মচারী থাকে তার যদি কোন প্রমাণ থাকে অবশ্যই তাকেও ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে এজন্য তিনি এই অঞ্চলের মানুষের সহযোগিতা চেয়েছেন।