শুক্রবার, ২৭শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে নতুন চিন্তাধারার প্রয়োগ ঘটান : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ নবীন বিসিএস ক্যাডারদের ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে তাদের মেধা ও উদ্ভাবনী শক্তিকে কাজে লাগানোর আহ্বান জানিয়েছেন।

আজ সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা মিলনায়তনে বিসিএস কর্মকর্তাগণের ৭৪তম বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্সের সনদ বিতরণ ও সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমি চাই নতুন কর্মকর্তারা দেশকে উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তর করতে তাদের মেধা ও উদ্ভাবনী শক্তিকে আরও কার্যকরভাবে কাজে লাগিয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন।”

১৪ বছর আগের বাংলাদেশের পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত ১৪ বছরে দেশের উন্নয়নের ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে।

তিনি নবীনদের পরিবর্তনের ধারা বজায় রেখে দেশকে এগিয়ে নেয়ার আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকারের একমাত্র লক্ষ্য ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করে দেশবাসীর জন্য উন্নত ও সুন্দর জীবন নিশ্চিত করা।

নতুন বিসিএস ক্যাডারদের ২০৪১ সালের সৈনিক হিসেবে আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি স্মার্ট দেশ হিসেবে গড়ে তোলা হবে। আজকের অফিসাররাই হবে আগামী দিনের সৈনিক।

তিনি বলেন, সরকারের প্রণীত ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ বাস্তবায়নের জন্য আপনাদের কাজ করতে হবে। সরকার ইতোমধ্যে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা করার জন্য এটির বাস্তবায়ন শুরু করেছে।

তিনি বলেন, “আপনাদের মনে রাখতে হবে যে আমাদের সবসময় সামনের দিকে অগ্রসর হতে হবে।”

তিনি বলেন, বাংলাদেশ এক সময় বিদেশী দেশগুলোর কাছে অবহেলিত ছিল। তাঁর সরকারের সময়োপযোগী পদক্ষেপের কারণে বাংলাদেশ এখন বিশ্ব মঞ্চে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।

কোভিড-১৯ মহামারী এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞার কারণে বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে বিদ্যুৎ, পানি ও গ্যাস ব্যবহারে সাশ্রয়ী হবার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন।

তিনি সকলকে সঞ্চয়ী ও সাশ্রয়ী হয়ে ওঠার ওঠার আহ্বান জানিয়ে বলেন, বিশ্বব্যাপী প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সহ সবকিছুর মূল্যবৃদ্ধি আকাশচুম্বী হয়েছে এবং যুদ্ধ কখন থামবে তা নিশ্চিত নয়।
এ সময় সবাইকে উৎপাদন বাড়ানোর উপর জোর দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমাদের উৎপাদন বাড়ানোর দিকে নজর দিতে হবে। আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাচ্ছি অবস্থা মোকাবিলা করতে।

প্রধানমন্ত্রী নতুন কর্মকর্তাদের দেশ ও জনগণের কল্যাণে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান।
তিনি নবীনদের রাষ্ট্র পরিচালনায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা অনুসরণ করার আহ্বান জানান।

তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত দেশ গড়ার জন্য কাজ করার পাশাপাশি দেশের সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করার জন্য উন্নয়ন কাজ ত্বরান্বিত করার জন্যও নবীন কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানান।

শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধুর লক্ষ্য সামনে নিয়েই আওয়ামী লীগ দেশ পরিচালনা করছে। তিনি (বঙ্গবন্ধু) নিজেকে জনগণের সেবক মনে করতেন। কিন্তু অবৈধ ক্ষমতা দখলকারীরা ক্ষমতায় এসে সব ধ্বংস করে দেয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সামরিক শাসকরা ক্ষমতা দখল করলে দুর্নীতি বেশি হয়। কারণ জনগণের কাছে তাদের জবাবদিহি করতে হয় না। আমরা জনগণের ভোটে নির্বাচিত, তাই আমরা কাজ করছি জনকল্যাণে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমরা শুদ্ধাচার নীতি নিয়েছি। দেশের সমৃদ্ধি ও সুশাসনই আমাদের লক্ষ্য।

মানুষকে উন্নত জীবন দেওয়ার উদ্যোগের অংশ হিসেবে তিনি বলেন, তাঁর সরকার প্রতিটি ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষকে ঘর দেওয়ার জন্য আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।
তিনি বলেন, সারাদেশে একজন মানুষও গৃহহীন ও ভূমিহীন যেন না থাকে সেজন্য তাঁর সরকার পদক্ষেপ নিচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী আবাসন প্রকল্প বাস্তবায়নে আন্তরিকভাবে কাজ করার জন্য সরকারি কর্মকর্তাদের ধন্যবাদ জানান।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী ও বাংলাদেশ লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের (বিপিএটিসি) রেক্টর মো. আশরাফ উদ্দিন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

সর্বশেষ

ফেসবুকে যুক্ত থাকুন

এই সম্পর্কিত আরও সংবাদ

সর্বশেষঃ