রবিবার, ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সাকিবকে দেশে ফিরতে নিরুৎসাহিত করার কারণ জানালেন ক্রীড়া উপদেষ্টা

সাকিব আল হাসানের দেশে ফেরা নিয়ে চলছে চরম নাটকীয়তা। মাত্র একদিন আগে সাকিবকে দলে রেখে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম টেস্টের স্কোয়াড ঘোষণা করেছিল বাংলাদেশ। সাকিবও দেশে ফেরার সব প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছিলেন। তবে শেষমেশ দেশে না ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।

দেশের মাটিতে শেষ টেস্ট খেলার উদ্দেশে যুক্তরাষ্ট্র থেকে দুবাইয়ে এসেছিলেন সাকিব। বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) বিকেলে সেখান থেকে তার রওনা দেয়ার কথা ছিল বাংলাদেশের উদ্দেশে। কিন্তু পরিস্থিতি বিবেচনায় শেষ মুহূর্তে তাকে ফ্লাইট বাতিল করার পরামর্শ দিয়েছে বিসিবি।

সাকিবকে দেশে ফিরতে নিরুৎসাহিত করার কারণ নিয়ে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, ‘আমি নিজেও চেয়েছি, সাকিব আল হাসানের মতো একজন ক্রিকেটার দেশের মাটিতে অবসর নিক। সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হয়েছে। তবে, প্রথম দিকেই বলেছি সাকিব আল হাসানের আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকারের সাথে সংশ্লিষ্টতার কারণে জনমনে ক্ষোভ রয়েছে; যা স্বাভাবিক। রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট করাসহ জনমনের ক্ষোভ নিরসনে তিনি ফেসবুক পোস্ট দিলেও, সাম্প্রতিক প্রতিবাদে প্রতীয়মান হয়েছে যে তা যথেষ্ট ছিল না।’

তিনি আরও বলেন, ‘যারা প্রতিবাদ করছে তাদেরও তা করার সাংবিধানিক অধিকার রয়েছে। সাউথ আফ্রিকা ও বাংলাদেশের মধ্যকার সিরিজে কোনোপ্রকার অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতেই আপাতত দেশে খেলতে আসার ক্ষেত্রে নিরুৎসাহিত করে বিসিবিকে পরামর্শ দিতে হয়েছে। খেলোয়াড়দের নিরাপত্তার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ক্রীড়াঙ্গনে দেশের ভাবমূর্তি রক্ষার আশু ব্যবস্থা হিসেবেই এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। তবে সকলেরই আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া উচিত বলে মনে করি। কোনো অভিযোগ থাকলে আইনি প্রক্রিয়ার আশ্রয় নিয়েই তার সমাধান খোঁজা যেতে পারে।’

সূত্রের মাধ্যমে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সাকিবের সঙ্গে একটি ‘জুম মিটিং’ করে বিসিবি। সেই মিটিংয়ে দেশে ফিরতে সাকিবকে নিষেধ করা হয়। বিসিবির পরামর্শ অনুযায়ী ফ্লাইট বাতিল করে দিয়েছেন সাকিব।

এর আগে ভারতের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্ট সিরিজ চলাকালীন টি-টোয়েন্টি এবং টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দেন সাকিব। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপকেই ওই ফরম্যাটে তার শেষ বলে অভিহিত করে সাকিব জানান, নিরাপত্তা পেলে দেশের মাটিতে শেষ টেস্ট খেলতে চান তিনি।

সাকিবের এই ঘোষণার পরপরই তার দেশে ফেরার বিষয়টি আলোচনায় আসে। এই ইস্যুতে দেশের ক্রিকেট সমর্থকদের মধ্যেও মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। একপর্যায়ে বিসিবি তার নিরাপত্তায় অপারগতা প্রকাশ করে। তবে অনেক নাটকীয়তার পর ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সাকিবকে নিরাপত্তা দিতে রাজি হয়।

সাকিবের দেশে ফিরতে বাধা নেই–যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের এমন আশ্বাসের পর বুধবার দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম টেস্টের জন্য ১৫ সদস্যের দলে সাকিবকে রাখা হয়। তবে গত কয়েকদিনে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। সাকিবকে দেশে ফেরানোর সিদ্ধান্তের কথা জেনে ফুঁসে উঠেছে বিক্ষুব্ধ জনতা। সাকিবের বিরুদ্ধে স্লোগান-ফেস্টুনে উত্তাল হয়ে উঠেছে মিরপুর শের-ই বাংলা স্টেডিয়াম। এই অবস্থায় সাকিব নিজের দেশে ফেরার ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত।

দেশে ফেরার বিষয় নিয়ে সম্প্রতি ক্রিকেট বিষয়ক ওয়েবসাইট ক্রিকইনফোর সঙ্গে কথা বলেছেন সাকিব। সেখানে তিনি বলেন, ‘পরবর্তী সময়ে কোথায় যাব, জানি না। তবে এটা প্রায় নিশ্চিত যে আমি দেশে ফিরছি না।’

সাকিবের এই বক্তব্য থেকে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, বাংলাদেশে সহসাই ফিরছেন না তিনি। তাই দেশের মাটিতে অবসর নেয়ার স্বপ্ন আদৌ পূরণ হবে কিনা এই অলরাউন্ডারের, সেটা নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

সর্বশেষ

ফেসবুকে যুক্ত থাকুন

এই সম্পর্কিত আরও সংবাদ

সর্বশেষঃ