আমতলী উপজেলার ১৫২ টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা কর্মবিরতিতে থাকায় বার্ষিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি। প্রধান শিক্ষকরা দায়সারা ইংরেজী বিষয়ের পরীক্ষার পরিবর্তে শারীরিক শিক্ষার মৌখিক পরীক্ষা নিয়েছেন। এতে দুশ্চিন্তায় পরেছেন অভিভাবকরা। দ্রæত শিক্ষকদের দাবী মেনে দেয়ার দাবী তাদের।
জানাগেছে, দশম গ্রেডসহ তিনদফা দাবীতে গত ৮ নবেম্বর থেকে সারা দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসুচী পালন করছেন। গত ১০ নবেম্বর শিক্ষকদের ১১ তম গ্রেডের কাজ চলছে বলে মন্ত্রনালয়ের অনুরোধে কর্মসুচি প্রত্যাহার করা হয়। কিন্তু ১৭ দিন পেরিয়ে গেলেও প্রাথমিক শিক্ষা মন্ত্রনালয় সহকারী শিক্ষকদের ১১ তম গ্রেডে উন্নীত করতে কার্যকর কোন পদক্ষেপ নেয়নি। গত বৃহস্পতিবার থেকে শিক্ষকরা ফের কর্মসুচী পালন করেন। সোমবার উপজেলার সকল বিদ্যালয়ে বার্ষিক পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সরকার দাবী মেনে না নেয়ায় সহকারী শিক্ষকরা পরীক্ষা বর্জন করেছেন। ফলে সোমবার প্রধান শিক্ষকরা ইংরেজী বিষয়ের পরীক্ষার পরিবর্তে শারীরিক শিক্ষার লিখিত পরীক্ষা নিয়েছেন। এতে উপজেলার ১৫২ টি বিদ্যালয়ের ২৪ হাজার কোমলমতি পরীক্ষার্থীর অভিভাবকরা দুশ্চিন্তায় পরেছেন।
খোজ নিয়ে জানাগেছে, সোমবার ইংরেজী বিষয়ের পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল কিন্তু সহকারী শিক্ষকদের পরীক্ষা বর্জনের কারনে ওই বিষয়ে পরীক্ষা নেয়া হয়নি। প্রধান শিক্ষকরা দায়সারা শারীরিক শিক্ষা বিষয়ের মৌখিক পরীক্ষা নিয়েছেন। তাতে অধিকাংশ পরীক্ষার্থী পরীক্ষা না দিয়ে চলে গেছেন।
সোমবার দুপুরে আমতলী বন্দর মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ঘুরে দেখাগেছে, প্রধান শিক্ষক জাকির খাঁন পরীক্ষার্থীদের নিয়ে একটি কক্ষে বসে আছে। তাদের পরীক্ষার খাতা দেয়া হয়নি।
আমতলী এমইউ বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেনীর পরীক্ষার্থী জোথি, রাজদ্বীপ বিশ্বাস ও হিমাদ্রী জানান, পরীক্ষা দিতে বিদ্যালয়ে গিয়েছিলাম কিন্তু শিক্ষকরা ইংরেজী বিষয়ের পরীক্ষা নেয়নি। পরে প্রধান শিক্ষক কিছু কিছু পরীক্ষার্থীর শারীরিক শিক্ষা বিষয়ের মৌখিক পরীক্ষা নিয়েছেন।
অভিভাবক মালামনি বলেন, শিক্ষকরা পরীক্ষা বর্জন করেছেন। তাই ইংরেজী বিষয়ের পরীক্ষা হয়নি।
আমতলী উপজেলার আঙ্গুলকাটা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ জাহিদুল ইসলাম লিটন বলেন, সরকার দাবী মেনে না নেয়ায় সহকারী শিক্ষকরা পরীক্ষা বর্জন করেছেন। সহকারী শিক্ষকদের সঙ্গে সহমত পোষণ করে পরীক্ষা নেয়া হয়নি। তিনি আরো বলেন, সরকার দাবী মেনে নিলে প্রয়োজনে আমরা বন্ধের মধ্যে পরীক্ষা নেয়া হবে।
আমতলী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও চাওড়া পাতাকাটা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ রবিউল ইসলাম বলেন, উপজেলার ১৫২ বিদ্যালয়ে বার্ষিক পরীক্ষা নেয়া হয়নি। সহকারী শিক্ষকরা পরীক্ষা বর্জন করেছেন।
আমতলী বন্দর মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ জাকির খাঁন বলেন, সহকারী শিক্ষকরা পরীক্ষা বর্জন করায় শারীরিক শিক্ষা বিষয়ে পরীক্ষা নেয়া হয়েছে।
আমতলী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ সফিউল আলম বলেন, বিদ্যালয়ে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে কোন বিষয় পরীক্ষা হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাব দেননি তিনি।








