জ্বালানিসংকট থেকে উত্তরণে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বসে সমাধান করা হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। এর আগে ব্যবসায়ীদের নিয়ে করণীয় ঠিক করা হবে।
সোমবার পূর্বাচলে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো আয়োজিত ‘জাতীয় রপ্তানি ট্রফি ২০১৮-১৯’ বিতরণ অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
বাণিজ্যসচিব তপন কান্তি ঘোষের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান এ এইচ এম আহসান, রিফাত গার্মেন্টের এমডি এ কে আজাদ এবং পিকার্ড বাংলাদেশ লিমিটেডের ডিএমডি অমৃত মাকিন ইসলাম বক্তব্য দেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বৈশ্বিক মন্দায় চলতি অর্থবছরের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা কমার আশঙ্কা করছেন বাণিজ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেছেন, ‘গত বছর আমরা ৬১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রপ্তানি করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছি। ’
তিনি বলেন, চলমান বিশ্ব পরিস্থিতি বিবেচনায় করণীয় ঠিক করতে দেশের ব্যবসায়ীদের নিয়ে বৈঠক করা হবে। প্রয়োজনে ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতাদের নিয়ে আমরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মতবিনিময় করব। ’
অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য দেশের নতুন প্রজন্ম কাজ করছে। রপ্তানি বৃদ্ধির মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নতি অব্যাহত রাখতে হবে বলে জানান মন্ত্রী।
বাণিজ্যসচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, বৈশ্বিক মন্দা এবং স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের পথে কঠিন নীতিমালা আসতে পারে। এ জন্য ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের আরো সতর্ক থাকতে হবে। একই সঙ্গে বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতা মোকাবেলায় সক্ষমতা তৈরি করতে হবে।
অনুষ্ঠানে সেরা রপ্তানিকারক নির্বাচিত হয়েছে রিফাত গার্মেন্ট। এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে আজাদ তাঁর প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, বৈশ্বিক মন্দায় দেশের রপ্তানি কার্যাদেশ ৩০ শতাংশ কমে এসেছে। তাই লোকসান হলেও কম দামে কাজ নেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া আগামী বছরের আগস্ট পর্যন্ত এর প্রভাব থাকবে। এই অবস্থায় কারখানায় গ্যাসসংকট আরো বেশি ঝুঁকি তৈরি করেছে। অন্যদিকে সরকারি পাওয়ার জেনারেশনে ৪২ শতাংশ গ্যাস সরবরাহ করা হয়। এখান থেকে ৫ শতাংশ গ্যাস শিল্পে দিলে বিদ্যুতের লোড শেডিং কমবে বলে তিনি আশা করছেন।
ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান এ এইচ এম আহসান বলেন, রপ্তানি বৃদ্ধি, নতুন বাজার এবং নতুন পণ্য উদ্ভাবনে উৎসাহ দিতে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো প্রতি আর্থিক বছরে জাতীয় রপ্তানি ট্রফি দেয়।
এবার ৭১টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২৯টি স্বর্ণ, ২৪টি রৌপ্য, ১৮টি ব্রোঞ্জ ট্রফি এবং সর্বোচ্চ রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রপ্তানি ট্রফি (স্বর্ণ) দেওয়া হয়।
প্রাণ-আরএফএল : ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জন্য সবচেয়ে বেশি রপ্তানি পদক পেয়েছে দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পপ্রতিষ্ঠান প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ। কৃষি প্রক্রিয়াজাত, প্লাস্টিক ও লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্য রপ্তানিতে অনবদ্য ভূমিকা রাখায় দেশের শীর্ষ এ গ্রুপকে স্বর্ণসহ ছয়টি রপ্তনি পদক দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এ বছর ৭১টি কম্পানি রপ্তানি পদক পেয়েছে। এর মধ্যে প্রাণ-আরএফএলের প্রতিষ্ঠানই রয়েছে ছয়টি। এ ছাড়া রপ্তানিকারক হিসেবে এ নিয়ে টানা ১৮ বার সেরা রপ্তানিকারকের পুরস্কার পেয়েছে প্রাণ-আরএফএল।
প্রাণ ডেইরির পক্ষে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী আহসান খান চৌধুরী পুরস্কার গ্রহণ করেন।
ইউনিভার্সেল জিন্স লিমিটেড : চট্টগ্রাম ইপিজেডভুক্ত শতভাগ বাংলাদেশি মালিকানাধীন ‘সি’ ক্যাটাগরির তৈরি পোশাক (নিট ও ওভেন) রপ্তানিতে সাফল্যের ফলে ইউনিভার্সেল জিন্স লিমিটেড জাতীয় রপ্তানি ট্রফি স্বর্ণপদকে পেয়েছে। প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মো. তানভীর পুরস্কার গ্রহণ করেন।