পড়াশোনা, গবেষণা বা অফিসের কাজের চাপে শরীরের যত্ন, ওষুধ এগুলো ঠিক মতো নেওয়া হলেও, নিজেকে গুছিয়ে রাখার দ্বায়িত্ব আমরা প্রায় নিই না বললেই চলে। কিন্ত…
পড়াশোনা, গবেষণা বা অফিসের কাজের চাপে শরীরের যত্ন, ওষুধ এগুলো ঠিক মতো নেওয়া হলেও, নিজেকে গুছিয়ে রাখার দ্বায়িত্ব আমরা প্রায় নিই না বললেই চলে। কিন্ত বয়ঃসন্ধি বা মাঝ বয়স; যে কোনও সময়ে নিজের পরিচর্যার দিকে অর্থাৎ নিজেকে পরিপাটি করে রাখার বিষয়েও যথেষ্ট যত্নশীল হওয়া দরকার। কাজের চাপ বা সম্পর্কে অশান্তি যে কোনও কিছু ঘটলেই আমাদের মনের ওপর বাড়তি চাপ পড়ে যা ত্বকে ফুটে ওঠে। কিভাবে নিজেকে সব সময় প্রেজেন্টেবল রাখা যায় তার কিছু গাইডলাইন দিচ্ছেন বিউটিশিয়ান সোহেলী
প্রথমেই জেনে নেওয়া যাক অতিরিক্ত স্ট্রেস থেকে ত্বকে কী কী সমস্যা হতে পারে:
(১) পিউবারটির সময় ব্রণ খুবই সাধারণ সমস্যা। হরমোনাল পরিবর্তন এই সময় ত্বক থেকে বেশি পরিমাণে সিরাম নির্গত করে। তেল উৎপাদক গ্ল্যান্ডের বেশিরভাগই আমাদের কপালে, মুখে, নাকে বা থুতনিতে থাকে। সুতরাং এই জয়গাগুলোতেই ব্রণ হয়। এছাড়া ব্ল্যাক হেডস বা হোয়াইট হেডস এর সমস্যাতেও অনেকে ভোগেন।
(২) যাদের হাইপারটেনশন বা হাইপারহাইড্রসিস এর সমস্যা আছে তারা এই মেডিক্যাল কন্ডিশনের কারণে অতিরিক্ত ঘামেন আর তার ফলে ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা তৈরি হয়।
এবার আসি কিভাবে নিজেকে পরিপাটি রাখবেন সেই প্রসঙ্গে:
(১) রোজ দু ‘ বেলা ক্লিনজার দিয়ে ভালো করে মুখ থেকে গলা, ঘাড় ভালো করে পরিষ্কার করুন। এরপর ফেস ওয়াশ বা মাইল্ড সোপ দিয়ে ত্বকে হাতের সাহায্যে সার্কুলার মোশনে ম্যাসাজ করুন। যাদের শুষ্ক ত্বক তারা মিল্ক ক্রিম জাতীয় ক্লিনসার ব্যবহার করুন আর যাদের তৈলাক্ত ত্বক তারা স্যালিসাইলিক বেসড ক্লিনজার বেছে নিন।
(২) সপ্তাহে ২ দিন স্ক্রাবার ব্যবহার করে ত্বক পরিষ্কার করুন। যাদের ব্রণ আছে তারা স্ক্রাবার ব্যবহার করবেন না। ঘরোয়া পদ্ধতিতে তৈরি চিনি ও মধু মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে ভালো করে ম্যাসাজ করতে পারেন। মুখের বন্ধ থাকা লোমকূপ গুলো খুলবে ও ত্বক ভেতর থেকে পরিষ্কার থাকবে।
(৩) মাথায় খুশকি হলে অ্যাকনে হতে পারে। তাই স্ক্যাল্পেও ক্লেনজিং করা দরকার।
(৪) ক্লিনজিং, টোনিং আর ময়েশ্চারচারাইজিং— এই তিনটি প্রতিদিনের রুটিন থেকে কোনওভাবেই বাদ দিলে চলবে না।
(৫) এরপর বাইরে রোদে বেরনোর আগে সান স্ক্রিন লোশন লাগাতেই হবে। আমাদের দেশের আবহাওয়া অনুযায়ী এসপিএফ ৪০ সান স্ক্রিন ব্যবহার করা ভালো। শুষ্ক বা তৈলাক্ত ত্বক অনুযায়ী মিনারেল বা কেমিক্যাল সানস্ক্রিন ব্যবহার করা যেতে পারে। বাইরে বেরোনোর কমপক্ষে ২০ মিনিট আগে সান স্ক্রিন মেখে নিন। অনেক পাউডার বা জেল সানস্ক্রিন ও ব্যবহার করেন। তবে যেটাই ব্যবহার করুন না কেন, যে কোনও এক ধরনের প্রোডাক্ট ও ব্র্যান্ড ব্যবহার করুন। অনেকেই ঘন ঘন ব্যান্ড পরিবর্তন করেন, এতে ত্বকের ক্ষতি হয়। কেমিক্যাল রিয়াকশন হতে পারে। যাদের সেনসিটিভ স্কিন তারা ডার্মাটোলজিস্ট এর পরামর্শ নিতে পারেন।
(৬) মেক আপ করার আগে সান স্ক্রিন লাগিয়ে তারপর মেকআপ করুন।
(৭) ঘরোয়া পদ্ধতিতে রোজ ত্বকের উজ্জ্বলতা বজায় রাখতে বাড়ি ফিরে টক দই ও ব্যাসন এর মিশ্রণ তৈরি করে মুখে লাগাতে পারেন। তারপর ২০ মিনিট রেখে হালকা মুখে ম্যাসাজ করে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
(৮) ঠান্ডা দুধ ও ময়দার মিশ্রণ সকালে ঘুম থেকে উঠে মেখে নিতে পারেন। তারপর স্নান করার সময় ফেস ওয়াশ বা সোপ দিয়ে তুলে নিতে পারেন। এতে ত্বক ঠান্ডা থাকবে।
উপরের এই কয়েকটি রুটিন যদি কম বেশি রোজ মেনে চলা যায়, তাহলে আপনার মুখের উজ্জ্বলতা থাকবেই।