বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে আয়ের উপর ১৫% ট্যাক্স দিতে হবে। এর প্রভাব ছাত্র ছাত্রীদের উপর পড়বে না।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৫ শতাংশ হারে আয়কর আদায়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক ২০০৭ ও ২০১০ সালে জারিকৃত প্রজ্ঞাপন বাতিলের হাইকোর্ট এর রায় বাতিল করে দিয়েছে আপিল বিভাগ।
হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা পৃথক ৪৫টি আপিল নিষ্পত্তি করে আপিল বিভাগে এই রায় ঘোষণা দিয়েছে।
রায়ে বলা হয়েছে, রাষ্ট্র চালানোর জন্য ট্যাক্স আহরণ দৈনন্দিন কাজ। অর্ডিন্যান্স অনুসারে সবার জন্য ট্যাক্স ধার্য করা আছে। ব্যক্তিদের জন্য ২৫ শতাংশ, সেখানে তাদের (প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়) কমিয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। তবে এর সঙ্গে ছাত্রদের সম্পর্ক নেই। ভ্যাট হলে ছাত্রদের সঙ্গে সম্পর্ক থাকত। এখন ট্যাক্স তাদের (প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ) মালিকদের দিতে হবে। আয়ের ওপর ১৫ শতাংশ ট্যাক্স দিতে হবে।
উল্লেখ্য, গত ২৮ জুন ২০০৭ সালে এনবিআর একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে। তাতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন কর্তৃক অনুমোদিত প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় ও অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় যারা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় নয়, তাদের উদ্ভূত আয়ের ওপর ১৫ শতাংশ হারে আয়কর পুনর্নির্ধারণ করা হলো। আগামী ১ জুলাই, ২০০৭ থেকে এটা কার্যকর হবে।
অপরদিকে ০১ জুলাই ২০১০ সালে এনবিআরের আরেক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ব্যতীত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, বেসরকারি মেডিকেল কলেজ, বেসরকারি ডেন্টাল কলেজ, বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ বা কেবল তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে শিক্ষাদানে নিয়োজিত বেসরকারি কলেজের উদ্ভূত আয়ের ওপর প্রদেয় আয়করের হার কমিয়ে ১৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হলো।
পরে এর সার্কুলারের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ৪৬টি রিট হয়। ৪৬টি রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১৬ সালের ৫ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট রায় দেন। রায়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সরকারের ১৫ শতাংশ হারে আয়কর আদায়ের দুই প্রজ্ঞাপন অবৈধ ঘোষণা করা হয়। একই সঙ্গে ওই দুই প্রজ্ঞাপন অনুসারে যে অর্থ আদায় করা হয়েছে, তা ফেরত দিতে এনবিআরকে নির্দেশও দেয়া হয়েছিল।
বর্তমানে এ সকল আদেশ বাতিল করে আপিল বিভাগ ১৫ শতাংশ হারে আয়কর দিতে বেসরকারিী বিশ্ববিদ্যালয় সমুহেকে নির্দেশ প্রদান করল। তবে যেহেতু এটি বেকলমাত্র বিশ্বববিদ্যালয়ের উপর মাত্র ধার্য্য করা হয়েছে সেখানে শিক্ষার্থীদের উপর এর প্রভাব পড়ার কোন কারন নেই। কারণ আয়কর আয়ের উপর হওয়ায় যার আয় যেমন তার করও সেই অনুপাতে হবে। এটি ছাত্রছাত্রীদের উপর চাপালে তা আদালতের রায়ের ভুল ব্যাখ্যা হবে।