প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বেশি কথা বললে, সব বন্ধ করে বসে থাকবো। ভোটে আসলে আবার করবো। দেখি কে দায়িত্ব নিতে রাজি হয়! সব রেডি করে দিয়েছি, এখন বসে বসে বড় বড় কথা বলে।
শুক্রবার (৬ অক্টোবর) নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম (ইউএনজিএ) অধিবেশনে যোগদানের ফলাফল সম্পর্কে গণমাধ্যমকে অবহিত করতে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে রিজার্ভ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেসব আঁতেল, জ্ঞানীগুণী কথা বলেন, তারা কি জানেন, আমরা যখন ক্ষমতায় এসেছি, তখন রিজার্ভ কত ছিল? বাংলাদেশ কোথায় ছিল, কোথায় এনে দাঁড় করিয়েছি? যতটুকু রিজার্ভ প্রয়োজন, আমাদের আছে। আমাদের ভালো থাকা জরুরি, নাকি রিজার্ভটা দরকার বেশি? যদি বলে, তাহলে রিজার্ভ আগের জায়গায় এনে দেই? বিদ্যুতকেন্দ্র-টেন্দ্র বন্ধ করে দেই।
তিনি বলেন, দেশ যখন অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, তখন অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি তোলে তখন বলতে হয়, সন্দেহ হয় রে। নির্বাচন নিয়ে আমাদের নিজেদেরও কিছু দোষ আছে। যারা ভোট চুরি করেছে তাদের কাছ থেকে সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা শুনতে হয়। জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়া সবই তো ভোট চোর। যারা ভোট পাবে না, যাদের জনসমর্থন নেই। যাদের কোটি কোটি টাকা আছে, তারা বিভিন্ন জায়গায় ধরনা দিয়ে বেড়াচ্ছে। আওয়ামী লীগের হাত ধরে জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত হয়েছে। এদেশের মানুষ জানে, নৌকায় ভোট দিয়ে উন্নতি হয়েছে। মানুষ স্বাবলম্বী হয়েছে। দারিদ্র বিমোচন হয়েছে।
সরকারপ্রধান বলেন, যুক্তরাষ্ট্র হঠাৎ অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলে। যখন দেশে স্বৈরশাসন ছিল, আমরা সংগ্রাম করেছি। নির্বাচন ব্যবস্থার যে সংস্কার। ভোটার তালিকা প্রণয়ন, জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা। এটা আওয়ামী লীগই করেছে। আমাকে শেখাতে হবে না। একটানা আমরা ক্ষমতায় আছি বলেই দেশের উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে।
ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের নিরাপত্তা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, একদিকে আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর স্যাংশন দেবে আরেকদিকে তাদের নিরাপত্তা চাইবে এটা কেমন কথা। আমেরিকায় আমাদের রাষ্ট্রদূতকে তেমন কোনো নিরাপত্তা দেওয়া হয় না। অপরদিকে বাংলাদেশের মার্কিন দূতাবাসের জন্য ১৫৮ জন পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা রয়েছে। এছাড়া মার্কিন রাষ্ট্রদূতের জন্য রয়েছে আলাদা বডিগার্ড। মার্কিন রাষ্ট্রদূতের নিরাপত্তার তেমন কোনো অভাব নেই। হলি আর্টিজান হামলার পর নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে রাষ্ট্রদূতদের নিরাপত্তার বাড়ানো হয়েছিল। তবে বর্তমানে এমন কোনো অসুবিধা নেই এবং আমাদেরও পুলিশ দরকার তাই বাড়তি নিরাপত্তা উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে।
এর আগে গত ১৭-২৯ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্ক এবং ওয়াশিংটন ডিসিতে থাকাকালীন প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৭৮তম অধিবেশন এবং অন্যান্য উচ্চ-পর্যায়ের ও দ্বিপাক্ষিক অনুষ্ঠানে এবং যুক্তরাষ্ট্রে প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেওয়া সংবর্ধনায় যোগ দেন। এছাড়া তিনি ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশ দূতাবাস পরিদর্শন করেন। সফরকালে প্রধানমন্ত্রী বেশ কয়েকটি সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন এবং যুক্তরাজ্যে প্রবাসী বাংলাদেশিদের পক্ষ থেকে তাকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।