বিশ্ববাজারে হঠাৎ স্বর্ণের দামে বড় উত্থান দেখা গেছে। সেই হিসেবে দেশের বাজারেও যেকোনো সময় দামি এই ধাতুটির দাম বাড়তে পারে।
শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) পৌনে ৬টার দিকে স্পট মার্কেটে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম অবস্থান করছিল ২ হাজার ৬৬২ দশমিক ০২ ডলারে। একদিনের ব্যবধানে শনিবার প্রতি আউন্সে ২১ দশমিক ১৮ ডলার বা ০ দশমিক ৭৯ শতাংশ দাম বেড়েছে।
বিশ্লেষকদের দাবি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে নতুন বিধ্বংসী রুশ ক্ষেপণাস্ত্রের হামলা এবং ইসরায়েলের সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে ইরান-সমর্থিত হিজবুল্লাহর মধ্যে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ ওঠায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে অনিশ্চয়তা দেখা গেছে। বিনিয়োগকারীরা স্বর্ণকে নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে বেছে নিচ্ছেন। খবর লাইভমিন্টের।
এলকেপি সিকিউরিটিজের ভিপি রিসার্চ অ্যানালিস্ট যতীন ত্রিবেদি বলেন, ‘শুক্রবার স্বর্ণের দরে উল্লেখযোগ্য অস্থিরতা দেখা গেছে। প্রথমে মূল্যবান ধাতুটির দর কম থাকলেও রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতের নতুন উত্তেজনা নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে স্বর্ণের চাহিদা বাড়িয়ে দিয়েছে। বর্তমানে ইমিডিয়েট সাপোর্ট ২,৬৬২ ডলারে (সাপোর্ট স্তর হলো এমন একটি দাম যেখানে ধাতুটির চাহিদা এতটাই শক্তিশালী যে এটি দরপতনকে প্রতিরোধ করে) এবং রেজিস্ট্যান্স ২,৬৫৫ থেকে ২,৬৬৫ ডলারে। রেজিস্ট্যান্স ভাঙলে স্বর্ণের দাম ২,৬৯০ ডলারে পৌঁছে যেতে পারে। আর ২,৬২০ ডলারের নিচে নেমে গেলে দর ২,৫৮০ ডলারে অবনতি হতে পারে।’
এইচডিএফসি সিকিউরিটিজ-এর হেড অব কমোডিটি অ্যান্ড কারেন্সি অনুজ গুপ্ত ইসরায়েল-হিজবুল্লাহ যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের প্রসঙ্গে বলেন, ‘রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সঙ্গে ইসরায়েল এবং হিজবুল্লাহর মধ্যে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠায় নতুন করে স্বর্ণের চাহিদা বেড়ে গেছে। বিনিয়োগকারীরা বর্তমানে স্বর্ণকেই নিরাপদ বিকল্প হিসেবে দেখছেন।’
এদিকে বুধবার (২৭ নভেম্বর) সন্ধ্যায় স্বর্ণের দাম বাড়িয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। নতুন দাম অনুযায়ী, ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম পড়বে ১ লাখ ৩৮ হাজার ৭০৮ টাকা। ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৩২ হাজার ৩৯৮ টাকা। ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১৩ হাজার ৪৯১ টাকা। সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯৩ হাজার ১৬০ টাকা।
বাজুসের পক্ষে স্বর্ণের দাম বাড়ানো বা কমানোর সিদ্ধান্ত নেয় বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি।
এই কমিটির এক সদস্য বলেন, ‘স্বর্ণের দাম বাড়ানো বা কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় আন্তর্জাতিক বাজারের পাশাপাশি স্থানীয় বাজারের ওপর ভিত্তি করে। স্থানীয় বাজারে পাকা স্বর্ণের দাম বাড়লে স্বাভাবিকভাবেই দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আবার পাকা স্বর্ণের দাম কমলে দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিশ্ববাজারের দামের চিত্র পাকা স্বর্ণের দামে প্রভাব ফেলে।’