পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার সরকারি মোজাহার উদ্দিন বিশ্বাস কলেজ মাঠে অনুষ্ঠিত প্রধানমন্ত্রীর জনসভা স্থলে যেতে না পেরে মনকষ্ট নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন অন্ততঃ বিশ হাজার মানুষ।
বৃহস্পতিবার (৩০ মে) দুপুরে প্রখর রোদ উপেক্ষা করে এসব মানুষ গ্রাম থেকে শহরে এলেও তারা এক নজর দেখতে পারেনি বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে। নিরাপত্তার অজুহাতে সাধারণ মানুষের সাথে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনীর সদস্যদের এমন আচরণে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে তৃণমূল জনপদের সাধারণ মানুষের মধ্যে। তবে এ নিয়ে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বক্তব্য, কারো সাথে অসদাচরণ করা হয়নি, নিরাপত্তা নিশ্চিত করণে তারা কেবল দায়িত্ব পালন করেছেন।
‘২৫ কিলোমিটার দূর থেকে এসেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেখতে পারি নাই। এতো করে বলার পরও সভাস্থলে যেতেই দেয়নি পুলিশ। আমি ত্রান নিতে আসি নাই, একথা বলার পরও আমাকে যেতে দেয়নি।’ এভাবেই গণমাধ্যমকে বলেছেন পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলা ধুলাসার ইউনিয়নের কাউয়ারচর গ্রামের সত্তরোর্ধ্ব আনিস তালুকদার।
কুয়াকাটার খাজুরা থেকে আশা ষাটোর্ধ্ব আব্দুল জব্বার বলেছেন, ‘ প্রধানমন্ত্রী সভা স্থলে আসার এক ঘন্টা আগে এসেছি, যাতে তার কথা ভালোভাবে শুনতে পারি। কিন্তু পুলিশ রাস্তার উপরেই উঠতে দেয়নি।’ চাকমইয়া ইউনিয়নের নিশান বাড়িয়া গ্রামের নাসিমা বেগম (৩৮) বলেন, ‘রৌদ্রের মধ্যে এসেও সভা মাঠে যেতে পারি নাই।’
লতাচাপড়ি ইউনিয়নের তুলাতুলি গ্রামের দেলোয়ার আকন (৫২) বলেন, ‘ঝড়ে টিনের চাল উড়ে গেছে। এতো বাতাসের তীব্রতা আগে দেখি নাই। ঘূর্ণিঝড় রেমাল’র পর প্রধানমন্ত্রী আসার খবরে আজ শহরে আসছিলাম, কিন্তু প্রধানমন্ত্রীকে দেখতে পারি নাই।’
পূর্ব চাকামইয়া গ্রামের নসু হাওলাদার (৬৮) বলেন, ‘গরমের মধ্যে বাড়ি থেকে এসে প্রধানমন্ত্রীকে দেখতে কলেজ মাঠে যেতে চাইছিলাম, কিন্তু বিজিবির এক সদস্য আমাকে ধাক্কা দিয়ে যেতে দেয়নি।’
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার দুপুরে ঘূর্ণিঝড় রেমাল আক্রান্ত কলাপাড়া উপকূলের দুর্গত মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণের জন্য ছুটে আসেন বঙ্গবন্ধু কন্যা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ত্রাণ বিতরণের এ সভা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন তিনি। সকাল দশটার মধ্যেই সভাস্থল সহ এর নিকটবর্তী সড়ক গুলো বন্ধ করে দেয় নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। অনুমোদন ছাড়া কোন ধরনের যানবাহন চলতে দেয়া হয়নি এসব সড়ক গুলোতে। এমনকি পায়ে হেঁটেও চলাচল করতে দেয়া হয়নি কাউকে। সকাল ১১ টার মধ্যেই সভা স্থলে লক্ষাধিক লোকের সমাগম ঘটে। সকাল ১১টার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেখতে, তার কথা শুনতে যারা গ্রাম থেকে এসেছিল তাদের আর সভা স্থলে যেতে দেয়া হয়নি।