ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদ বলেছেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে বিভিন্ন স্থানে সহিংসতা ও নাশকতা ও হামলাকারীরা পার পাবে না। জামায়াত-শিবির ও বিএনপির সন্ত্রাসীরা গর্তে লুকিয়ে থাকলেও প্রত্যেককে খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা হবে।
তিনি বলেন, নিরাপত্তার স্বার্থে অনেককে ডিবি হেফাজতে আনা হয়েছে। তবে এর মধ্যে কোনো নিরপরাধ ব্যক্তিকে হয়রানি করা হবে না।
রোববার রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
অতিরিক্ত কমিশনার হারুন বলেন, কোটা আন্দোলনকে ঘিরে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করে জামায়াত-শিবির ও বিএনপির সন্ত্রাসীরা দেশের বিভিন্ন স্থানে সরকারি গুরুত্বপূর্ণ অনেক স্থাপনা ধ্বংস করে দিয়েছে। আমাদের গর্বের মেট্রোরেলে সহিসংতা চালিয়েছে, আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে অনেকের নাম নম্বর পেয়েছি। নেতৃত্ব প্রদানকারীদের মধ্যে চারজনকে গ্রেফতার করেছি। এঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক আবু হান্নান। বাকিদেরও নাম ও নম্বর আমাদের কাছে আছে। তারা কোথায় আছেন, তাদের সন্ধানে ডিবির টিম কাজ করছে।
তিনি আরও বলেন, মেট্রোরেলে হামলা ও অগ্নিসংযোগকারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ হল ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইমাম আল নাসের, বিজয় একাত্তর হল ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বজলুর রহমান বিজয় এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সহ-সভাপতি ফেরদৌস রুবেলকে গ্রেফতার করেছি।
ডিবি প্রধান বলেন, গত ১৯ জুলাই সহযোগীদের নিয়ে তারা মিরপুর ১০ নম্বর ও কাজীপাড়া মেট্রোরেল এলাকায় নৈরাজ্য সৃষ্টি করে। তারা মেট্রোরেলে ভাঙচুর ও বিভিন্ন স্থানে অগ্নিসংযোগ করে। এ ছাড়া নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা চালায় ও পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে হত্যা করেছে।
হারুন অর রশীদ বলেন, যারা পুলিশকে হত্যা করেছে, সাধারণ মানুষকে হত্যা করেছে, স্বপ্নের মেট্রোরেলসহ সরকারি স্থাপনায় নাশকতা চালিয়েছে, যারা এসবের নেতৃত্ব দিয়েছে, অর্থ আদান-প্রদান করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। যেখানেই থাকুক না কেন তাদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
ডিবি প্রধান বলেন, গত ২৮ অক্টোবরে আমরা রাষ্ট্রীয় স্থাপনা ও বিচারপতির বাসভবনে হামলার চিত্র দেখেছি। কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময়ও কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে এর আড়ালে আমরা দেখলাম রাষ্ট্রীয় স্থাপনায় হামলা ও পুলিশকে টার্গেট করা হয়েছে।
ডিবি প্রধান বলেন, নৈরাজ্য ও অপতৎপরতা সৃষ্টি করে যারা একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচিত সরকারের পতন ঘটাতে চায়। তারা আসলে বোকার স্বর্গে বাস করে। তারা অতীতেও সফল হয়নি, আগামীতেও হবে না।
পুলিশ কর্মকর্তা হারুন অর রশিদ বলেন, যারা সরকারি সম্পদ নষ্ট করে আগুন জ্বালিয়েছে, পুলিশ সদস্যদের ওপর আক্রমণ করেছে, সাধারণ অনেক মানুষকে পুলিশ ভেবে টেনে নিয়ে হত্যা করেছে, যারা এ ধরনের সহিংসতা চালিয়েছে, আমি মনে করি তারা বাংলাদেশের উন্নয়নের পক্ষের কোনো লোক না। তারা লুকিয়ে থেকে পার পাবে না। তাদেরকে ডিবি খুঁজছে। প্রত্যেককে গর্ত থেকে খুঁজে বের করে আইনের আওতায় নিয়ে আসবো। কোনো নিরপরাধ ব্যক্তিকে হয়রানি করবো না।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অপরাধ তদন্তের পাশাপাশি কেউ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগলে তাকেও নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর।