সনাতন ধর্মাবলম্বিদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় কোনো সুনির্দিষ্ট নিরাপত্তা শঙ্কা বা হুমকি নেই, তারপরও সব ধরনের শঙ্কা মাথায় রেখেই সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান।
তিনি বলেন, আগামীকাল থেকে পাঁচ দিনব্যাপী দুর্গা পূজার মূল কার্যক্রম শুরু হবে। নিরাপত্তার জন্য যা যা ব্যবস্থা নেওয়া দরকার এবং সব ধরনের শঙ্কা মাথায় রেখেই সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তুলা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর পুরান ঢাকায় ঢাকেশ্বরীর জাতীয় মন্দির পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কমিশনার এ কথা বলেন।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় ২৪৮টি পূজামন্ডপ রয়েছে। এ মন্ডপগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। মহালয়া থেকে আজ পর্যন্ত এক ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল। মহাষষ্ঠি থেকে বিসর্জন পর্যন্ত পুরো সময়টাই পুলিশ আনসারসহ যে স্বেচ্ছাসেবক দল রয়েছে, তাদের সহযোগিতায় নিরাপত্তা কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।
তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন পূজা মন্ডপে ও আশপাশের এলাকায় সিভিল পোশাকেও পুলিশ মোতায়েন থাকবে। আয়োজকদের সঙ্গে আমাদের একাধিক সভা হয়েছে। আমরা আশা করি, আগামী পাঁচ দিন অত্যন্ত সুন্দরভাবে অনুষ্ঠান শেষ করতে পরবো।’
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে পূজা উদযাপনে কোনো ধরনের শঙ্কা রয়েছে কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘পূজা উপলক্ষে ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় কোনো সুনির্দিষ্ট শঙ্কা নেই। তবে, সব ধরনের শঙ্কা মাথায় রেখে আমাদের পরিকল্পনা সাজানো হয়েছে এবং আমরা সব ধরনের শঙ্কা মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত রয়েছি।’ পূজামন্ডপের সার্বিক নিরাপত্তা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রত্যেকটি জায়গায় আর্চওয়ে এবং বিশেষ টিম থাকবে। প্রত্যেকটি পূজা মন্ডপেই সিসি ক্যামেরার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সব পূজা মন্ডপকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে নিরাপত্তা দেয়া হচ্ছে। আর প্রধান পুজা মন্ডপে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য উদাহরণ। তবে, কিছু মহল হীন স্বার্থ হাসিলের জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই সম্প্রীতি ক্ষুন্ন করার চেষ্টা করে থাকে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ ধরনের গুজব বা উস্কানি মোকাবেলায় সার্বক্ষণিক সাইবার মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা রয়েছে। আমাদের পুলিশের পক্ষ থেকে এটি প্রতিরোধ করার ব্যবস্থা আছে। এ ধরনের কোনো কিছু পেলে এ বিষয়ে আমাদেরকে জানানোর জন্য পূজা কমিটিগুলোকে অনুরোধ করা হয়েছে। আমাদের মনিটরিং টিম ২৪ ঘণ্টা এটি প্রতিরোধ করার জন্য প্রস্তুত রয়েছে।’ বিসর্জনের ঘাটে পুলিশ ও নদীতে নৌ পুলিশকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দুর্গা বিসর্জন দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহবান জানান।
পরিদর্শনকালে ঢাকা মহানগর পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি মনীন্দ্র কুমার নাথ, সাধারণ সম্পাদক রমেন মন্ডল, ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (এ্যাডমিন) একেএম হাফিজ আক্তার, ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার ডিবি প্রধান হারুন অর রশীদসহ ডিএমপির বিভিন্ন পদমর্যাদার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।