প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেছেন, জাতিকে ধ্বংস করতেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পর জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয়। এ দুই হত্যাকাণ্ডের ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে সামনে এগোনোর আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। সুপ্রিম কোর্ট মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘যদি আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি, বহু দলে বিশ্বাস করি, তাহলে সহনশীল হতেই হবে। আমি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করব অথচ সহনশীল হব না, এটাকে গণতন্ত্রের চর্চা বলা যাবে না।’
তিনি বলেন, ‘আমরা যদি একাত্তরকে মেনে নিই, সংবিধান মেনে নিই, গণতন্ত্রকে মেনে নিই, তারপর যদি রাজনীতি শুরু করা যায়, সমাজনীতি শুরু করা যায়, অর্থনীতি শুরু করা যায়, বিচার শুরু করা যায়, তাহলে আমাদের মধ্যে যে দূরত্ব আছে সেটা কমে আসবে।’
জাতীয় শোক দিবসের তাত্পর্য তুলে ধরে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমার মতে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয় এই জাতিকে ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য।
ঠিক সেই হিসাব-নিকাশ থেকেই ৩ নভেম্বর জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয়, যাতে জাতি দিন দিন ধ্বংসের দিকে যায়। সেই ইতিহাস থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে। তারপর আমাদের এগোতে হবে। অন্যথায় বারবার আমরা বিপদের সম্মুখীন হতেই থাকব।
’
প্রধান বিচারপতি বঙ্গবন্ধুর সাধারণ জীবনযাপন, সমাজ ও রাজনীতিতে তাঁর সততা-সাহসিকতার কথা তুলে ধরেন শোক দিবসের আলোচনায়। সেই সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু, সংবিধান ও গণতন্ত্র মেনে রাজনীতি, সমাজনীতি ও অর্থনীতি নির্ধারণ করতে আহ্বান জানান বিচার বিভাগের প্রধান।
প্রধান বিচারপতি ছাড়া শোক দিবসের আলোচনায় অংশ নেন আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, বিচারপতি বোরহান উদ্দিন, বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম, বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম, বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী, বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম, হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মো. রেজাউল হাসান, বিচারপতি জে বি এম হাসান, বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল, বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, বিচারপতি খিজির আহমেদ চৌধুরী, বিচারপতি আবু আহমেদ জমাদার, বিচারপতি মো. বশির উল্লাহ।
আলোচনা অনুষ্ঠানের আগে সুপ্রিম কোর্ট ইনার গার্ডেনে স্থাপিত ‘স্মৃতি চিরঞ্জীব’ নামের বঙ্গবন্ধুর স্মারকসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। আর আলোচনা অনুষ্ঠানের পর শুরু হয় রক্তদান কর্মসূচি।
আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি, সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও আইনজীবীরা এ কর্মসূচিতে অংশ নেন।