গাজীপুরের শালনা নাসির উদ্দিন মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজের উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অপসারণের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলাকালে পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর ও সরকারি কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামলার বাদী গাজীপুর সদর থানার এসআই উৎপল কুমার। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাজমা নাসরিন, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মতিউর রহমান, তার সহযোগী মাকসুদুর রহমান, মোবারক হোসেন ও তামিম হোসেন তন্ময়। মামলায় অধ্যক্ষকে হামলার ইন্ধনদাতা হিসেবে দেখানো হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের বুধবার দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ জানায়, নানা অনিয়ম ও সেচ্ছাচারিতাসহ বিভিন্ন অভিযোগ তুলে প্রায় এক মাস ধরে ওই ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে অপসারণের দাবিতে আন্দোলন চলছিল। এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার কলেজ ক্যাম্পাস ও পাশের ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে বিক্ষোভ-অবরোধ করে। এ সময় অধ্যক্ষ ও আওয়ামী লীগ নেতার উস্কানিতে বহিরাগতরা পুলিশের সরকারি কাজে বাধা প্রদান ও পুলিশের পিকআপ ভাঙচুর করে। ঘটনার সময়ে তাদের আটক করে সদর থানায় আনা হয়। পরে ওই ঘটনায় থানার উপ-পরিদর্শক উৎপল কুমার বাদী হয়ে মঙ্গলবার মধ্যরাতে একটি মামলা দায়ের করেন।
স্থানীয়দের একটি সূত্র জানায়, ওই কলেজের ব্যবস্থাপনা কমিটি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এরই জের ধরে অধ্যক্ষের পদত্যগের দাবিতে মঙ্গলবার বিক্ষোভ শুরু করে। এসময় কলেজের পাশের ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করে। এক পর্যায়ে এসব বহিরাগত লোকজন শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে গেলেও বিশৃংখল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
মামলার বাদি গাজীপুর সদর থানার এসআই উৎপল কুমার জানান, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের অপসারণের দাবিতে শিক্ষার্থীরা প্রায় দুই ঘণ্টা বিক্ষোভ ও মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। এতে ওই মহাসড়কের উভয় দিকে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। খবর পেয়ে গাজীপুর সদর থানার পুলিশ গিয়ে তাদের বহনকারী পিকআপ গাড়িটি কলেজের মাঠে রেখে মহাসড়কে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন থামাতে যায়।
এক পর্যায়ে পুলিশের গাড়িতে ইটপাটকেল ছুড়ে ও হামলা চালিয়ে গাড়ি ভাঙচুর করা হয় । পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করলে দুপুরে মহাসড়কে যানবাহন চলাচল শুরু করে। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে কলেজ অধ্যক্ষসহ ৫ জনকে থানায় হেফাজতে নিয়ে যায়।
গাজীপুর মহানগরীর সদর থানার ওসি জিয়াউল ইসলাম জানান, ওই ঘটনার সময় পুলিশের পিকআপ ভ্যান ভাংচুর ও পুলিশের কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগে থানার উপ-পরিদর্শক উৎপল কুমার বাদী হয়ে মঙ্গলবার দিবাগত মধ্যরাতে একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় কলেজের অধ্যক্ষসহ ১০ জনের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও অনেককে আসামি করা হয়েছে। পরে থানা হেফাজতে থাকা পাঁচজনকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
এদিকে প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি গাজীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মোরাদ আলী জানান, উদ্ভূত পরিস্থিতি ও নানা অভিযোগের প্রেক্ষাপটে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। থানার মামলার কপি পেলে সাসপেন্ডসহ বিভাগীয় ব্যবস্থা ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন যে, ওই প্রতিষ্ঠানটর ব্যবস্থাপনা কমিটি নিয়ে বিরোধের জের ধরে এ ঘটনাগুলো ঘটেছে।