গত বেশ কয়েকদিন ধরে চরম অশান্ত ছিল পার্বত্য চট্টগ্রামের খাগড়াছড়ি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে ব্যাপক সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছিল স্থানীয়রা। পাহাড়ে এই অশান্তির পেছনে ভারতকে দায়ী করছে বেশ কয়েকটি মহল। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেনেন্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলমও গত সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) অভিযোগ করেন, খাগড়াছড়িকে অশান্ত করার পেছনে ভারত বা ফ্যাসিস্টের ইন্ধন আছে।
অবশেষে এ অভিযোগ নিয়ে মুখ খুলেছে ভারত। খাগড়াছড়িতে সম্প্রতি সৃষ্ট অশান্তিতে ভারতের জড়িত থাকার অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জসওয়াল। খবর ইন্ডিয়া টুডের।
শুক্রবার (৩ অক্টোবর) সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে জসওয়াল বলেন, আমরা এ ধরনের ভিত্তিহীন অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করছি। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার আইন ও শাসন বজায় রাখতে পারছে না। আর এ সরকারের একটি অভ্যাস আছে, তারা তাদের ব্যর্থতার দায় অন্যদিকে সরিয়ে দেয়।
ভারতীয় এ কূটনৈতিক উল্টো অভিযোগ করেন, কথিত উগ্রবাদীরা পাহাড়ি সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন করছে, তাদের ভূমি দখল করছে। আমি ঢাকাকে বলব, নিজেদের আত্মদর্শন করুন এবং চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলের সংখ্যালঘুদের ওপর উগ্রবাদীদের হামলা ও তাদের জমি দখলের ঘটনা গুরুতরভাবে তদন্ত করুন।
গত ২৩ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ি জেলা সদরের সিঙ্গিনালা এলাকায় এক কিশোরীকে অচেতন করে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর বাবা তিনজনকে অজ্ঞাত আসামি দেখিয়ে সদর থানায় মামলা করেন। পরদিন ২৪ সেপ্টেম্বর পুলিশ সন্দেহভাজন শয়ন শীলকে (১৯) গ্রেপ্তার করে।
এই মামলাকে কেন্দ্র করে খাগড়াছড়িকে অশান্ত করার চেষ্টা করে একটি দুর্বৃত্ত মহল। কিন্তু পরবর্তীতে জানা যায়, ওই কিশোরী ধর্ষণের শিকারই হয়নি। মেডিকেল রিপোর্টে এর কোনো আলামত পাওয়া যায়নি। কিন্তু, এর মধ্যেই দুর্বৃত্তরা শত শত ঘরবাড়ি ও দোকানে ভাঙচুর ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটায়।
প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট অভ্যুত্থানের মুখে ভারতে আশ্রয় নেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর থেকে সেখানেই আছেন তিনি। বাংলাদেশ সরকার বারবার ভারতকে জানিয়েছে, ভারতে বসে বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করছেন শেখ হাসিনা।
এর মধ্যেই স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ভারত ও পতিত স্বৈরাচার মিলে খাগড়াছড়িতে অশান্তি তৈরির চেষ্টা করছে। যা আজ ভারত অস্বীকার করেছে।