বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কোটা সংস্কার আন্দোলন ও সর্বশেষ এক দফা দাবির আন্দোলনে সৃষ্ট দেশের অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে পর্যটক শূন্য হয়ে পড়ে পর্যটন নগরী কুয়াকাটা। এতে ধ্বস নামে পর্যটন খাতের ব্যবসায়। পর্যটন নগরী কুয়াকাটায় পর্যটকের উপস্থিতি না থাকায় অলস সময় পার করছে পর্যটনশিল্পের সাথে যুক্ত সকল ব্যবসায়ীরা। ফলে পর্যটন নির্ভর ব্যবসায়ীদের মাঝে বিরাজ করছে চরম হতাশা। চাকুরী হারানোর শঙ্কায় অন্ততঃ ১৫শত কর্মকর্তা ও কর্মচারী।
বিভিন্ন হোটেল ও রিসোর্টে কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, চলমান আন্দোলনে পর্যটক না থাকায় অলস সময় পার করছে হোটেল কর্মচারীরা। অধিকাংশ হোটেল কর্তৃপক্ষ ছুটি দিয়েছে কর্মচারীদের।মৌসুমের শুরুতে এমন খারাপ পরিস্থিতি মোটেই স্বাভাবিকভাবে মেনে নিতে পারছেন না হোটেল ব্যবসায়ী।
সি গোল্ড রিসোর্টের কর্মচারী মো. জিসান বলেন, অবসর সময় কাটাচ্ছি। বিগত মাস খানেক ধরেই পর্যটকদের আনাগোনা নেই।
আবাসিক হোটেল কানসাই ইন’র ব্যবস্থাপক ফরাজি মো. জুয়েল বলেন, পর্যটকদের আনাগোনা না থাকায় অনেক আবাসিক হোটেল, মোটেল ও রিসোর্ট বন্ধ হয়েছে। সামনে এমন হলে বাকীরাও বন্ধ করে দিবে। এতে চাকুরী হারানোর শঙ্কা দেখা দিয়েছে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে।
সৈকতের ফটোগ্রাফার মো. মাসুদ বলেন, প্রতিদিন ১হাজার টাকা থেকে ১৫শত টাকা আয় হত। গত কয়েকদিনে ডেইলি ১০০ টাকাও আয় হয়না। বৌ বাচ্চা নিয়ে সংসার চালানো, মাস গেলে বাড়ি ভাড়া দিয়া টিকে থাকতে এখন কষ্ট হচ্ছে। এটা থেকে মুক্তি চাই, না হয় না খেয়ে মারা যেতে হবে।
সৈকতের চা বিক্রেতা আলতাফ বলেন, মানুষ এমন দূরাবস্থা দেখে ভয় পাচ্ছে, ঘর থেকে বের হতে। এমন সংকট আমরা চাইনা। দ্রুতই কেটে যাবে আশা করি।
হোটেল গোল্ডেন ইনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কেএম জহির জানান, দেশের অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে আমরা সবার আগে ধাক্কা খাই। এ ধাক্কা কাটতে সময় লাগে অনেকদিন। আমরা এমন পরিস্থিতি থেকে থেকে মুক্তি চাই।
কুয়াকাটা হোটেল মোটেল এমপ্লোয়িজ এসোসিয়েশনের সভাপতি ইব্রাহীম ওয়াহিদ বলেন, কষ্টে কাটছে আমাদের দিনগুলো। অনেকেই চাকরি হারিয়েছে। এমন চলতে থাকলে বাকী কর্মচারীরাও চাকরি হারানোর শঙ্কায় থাকবে।
হোটেল মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি মোতালেব শরীফ বলেন, দেশে চরম অস্থিরতা থাকলে মানুষ ঘর থেকে বের হয়না। গত কয়েক দিন ধরে অস্থিরতায় পর্যটকরা মুখ ফিরেয়ে নিয়েছে কুয়াকাটা থেকে। মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে কুয়াকাটায় পর্যটক আসবে না, আর পর্যটক না আসলে আমরা পথে বসে যাবো।