‘স্বামী মারা যাওয়ার পর বোনটিকে কতোবার বলেছি চলে আসার জন্যে’। ‘কিন্তু সে তার স্বামীর ভিটা ছেড়ে যাবে না’। ‘ছেলে তালহাকে (৮) নিয়ে এখানেই বসবাস করতো’। ‘দু’জনকেই মেরে ফেলেছে’। ‘কাউকেই বাঁচতে দিলো না ঘাতকরা’। বাচ্চাটাকেও মেরে ফেললো। কান্নাজড়িত কণ্ঠে আহাজারি করে এমনিভাবেই কথাগুলো বলছিলেন নিহত রাজিয়ার বড় বোন শাহিনা সুলতানা।
রোববার সকালে আড়াইহাজারের উজান গোবিন্দপুর এলাকার নিজ ঘর থেকে উদ্ধার করা হয় রাজিয়া সুলতানা ও তার ছেলে তালহার লাশ। দু’জনকেই গলা কেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় ওই এলাকায় শোকাবহ ও থমথমে পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।
এ ব্যাপারে নিহতের মা খন্দকার তাসলিমা বেগম জানান, মেয়েটির স্বামী মারা যাওয়ার পর বলেছিলাম বাড়ি চলে যাওয়ার জন্য। কিন্তু ছেলের দিকে তাকিয়ে কোথাও যায়নি মেয়েটি। অবশেষে মা-ছেলে একসঙ্গে চলে গেছে। দু’জনকেই ঘাতকরা কুপিয়ে মেরে ফেলেছে। মেয়েটির সংসারে আর কেউ রইলো না।
খন্দকার তাসলিমা আরও বলেন, ‘আমার নাতি (তালহা) সারাক্ষণ আমাকে নানু নানু বলে ডাকতো। এখন আর কেউ ডাকবে না। নাতি ও আমার মেয়েকে বাঁচতে দিলো না। স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে আমার মেয়েটি নীরব হয়ে যায়। তাকে সান্ত্বনা দেওয়ার মতো কেউ ছিলো না। স্বামীর ভিটা আঁকড়ে ধরে ছেলেকে নিয়েই তার স্বপ্ন ছিল। এখন আর কেউ রইলো না।’ নিহত রাজিয়ার ছোট বোন ফারহানা সুলতানা বলেন, ‘আমার বোন কেমন ছিল এলাকাবাসী সবাই জানে। কারও সঙ্গে তার শত্রুতা ছিল না। কারও সঙ্গে কখনো কথা বলতো না। সবসময় পর্দা করে চলতো। আমার ভগ্নিপতি মারা যাওয়ার পর আমিই সবসময় তাদের বাড়ি আসা-যাওয়া করতাম। আজ থেকে আর আসতে হবে না আমাকে।
এ বিষয়ে আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুল হক হাওলাদার বলেন, মরদেহ দু’টি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন, এ হত্যাকান্ডের পেছনে অনেকগুলো কারণ থাকতে পারে। আমাদের তদন্ত সংস্থাগুলো সবগুলো বিষয় নিয়ে তাদের কাজ চলমান রেখেছে।