এক আফগান তরুণীর কথায়, “এ দেশে পশুদের থেকেও মহিলাদের অবস্থা খারাপ। পশুরা নিজেদের ইচ্ছামতো যেখানে খুশি ঘুরে বেড়াতে পারে। আমাদের সেই স্বাধীনতাটুকুও কেড়ে নেওয়া হয়েছে।”
তালিবান ফতোয়ার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ আফগান ছাত্রীদের। ছবি: রয়টার্স।
আর দু’দিন বাদেই ভাই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যাবে। আর সেটা তাকিয়ে তাকিয়ে দেখতে হবে তাঁকে। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢোকার অধিকার তো কেড়ে নিয়েছে সরকার! সুতরাং ভাইয়ের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের চৌকাঠে পা রাখার স্বপ্নটা অধরাই থেকে গেল বছর উনিশের আফগান তরুণীর।
সপ্তাহখানেক আগেই বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ার জন্য প্রবেশিকা পরীক্ষায় বসেছিলেন মারওয়া নামে ওই আফগান তরুণী। কাবুলে একটি মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিও হয়েছিলেন। নার্সিং নিয়ে পড়াশোনা শুরু করেছিলেন। কিন্তু তালিবান সরকারের এক ঘোষণায় সেই স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে গিয়েছে মারওয়ারের। বিশ্ববিদ্যালয়ে পা রাখার আগেই সেই স্বপ্ন কেড়ে নিয়েছে তালিবান। তারা ঘোষণা করেছে, মহিলাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে আর ঢুকতে দেওয়া হবে না। আর সেই ঘোষণাতেই হাজার হাজার আফগান তরুণীর স্বপ্ন ভেঙে খান খান হয়ে গিয়েছে।
তাঁদের মধ্যেই এক জন মারওয়া। সংবাদ সংস্থা এএফপিকে তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ে মহিলাদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি না করে তালিবান যদি আমাদের মাথা কেটে নিত, অনেক ভাল হত। মহিলা হয়ে জন্ম নেওয়াই তা হলে পাপ হল? আমি যে বেঁচে আছি, এটা ভাবতেই ঘেন্না লাগছে।”
তাঁর কথায়, “এ দেশে পশুদের থেকেও মহিলাদের অবস্থা খারাপ। পশুরা নিজেদের ইচ্ছামতো যেখানে খুশি ঘুরে বেড়াতে পারে। আমাদের সেই স্বাধীনতাটুকুও কেড়ে নেওয়া হয়েছে।” ভাই হামিদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবেন, এই স্বপ্নে বিভোর ছিলেন মারওয়া। কিন্তু এখন তা দুঃস্বপ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। হামিদকে বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে দেখবেন ঘরে বসে। তাঁর কথায়, “এটাই কি চেয়েছিলাম? ঘরে বসে থাকতে হবে বলেই কি নার্সিং প্রশিক্ষণের জন্য পড়াশোনা করেছিলাম?” মারওয়ার এই প্রশ্নের আর কোনও মূল্য নেই তালিবানের কাছে। মারওয়ার মতোই আরও আফগান মহিলা সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন। তাঁদের কথায়, “এ ভাবে তিলে তিলে না মেরে, একেবারেই মেরে ফেললে ভাল হয়।” আনন্দবাজার।