রবিবার, ২২শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ঋণ পরিশোধে আবারো বড় ছাড় দিলো বাংলাদেশ ব্যাংক

ঋণ পরিশোধে ব্যবসায়ীদের আবারো বড় সুবিধা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন থেকে মেয়াদি ঋণের কিস্তির অর্ধেক পরিশোধ করলেই ঋণ গ্রহণকারী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে আর খেলাপি করা হবে না। ঋণের কিস্তির বকেয়া টাকা পরিশোধের সময়ও বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন থেকে ব্যাংক ও গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে ঋণের মেয়াদ শেষের পরে আরও দুই বছর ধরে বকেয়া ঋণ পরিশোধ করা যাবে।

সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংক এক সার্কুলারে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে এ সিদ্ধান্ত জানিয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, চলতি বছরের শেষ প্রা‌ন্তিকের (অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর) ঋণের কিস্তির ৫০ শতাংশ ডিসেম্বরের মধ্যে পরিশোধ করলে ঋণ গ্রহীতা খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত হবেন না। এর আগে গত জুন মাসে এক সার্কুলারে বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছিল কিস্তির ৭৫ শতাংশ অর্থ পরিশোধ করলে গ্রাহককে খেলাপি করা হবে না।

সার্কুলারে বলা হয়েছে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ প্রলম্বিত হওয়ায় তার দীর্ঘ মেয়াদি নেতিবাচক প্রভাবে শিল্পের উৎপাদন ব্যয় বেড়েছে। ফলে ঋণ গ্রহীতাদের প্রকৃত আয় কমেছে। এ কারণে দেশের অর্থনৈতিক কর্মকা- গতিশীল রাখা এবং ঋণ গ্রহীতাদের ঋণের কিস্তি পরিশোধ সহজ করতে মেয়াদি ঋণের বিপরীতে গত অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত কিস্তিগুলোর ন্যূনতম ৭৫ শতাংশের পরিবর্তে ৫০ শতাংশ চলতি ডিসেম্বরের শেষ কর্মদিবসের মধ্যে পরিশোধ করা হলে ওই ঋণগুলো খেলাপি করা হবে না। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মূলত খেলাপি ঋণের পরিমাণ কম দেখাতেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

এতে সাময়িকভাবে খেলাপি ঋণ কিছুটা কম দেখালেও ভবিষ্যতে তা আরও বাড়বে। যা অর্থনীতিতে বড় ধরনের সংকট তৈরি করবে। কেন না, এই সুযোগের ফলে যাদের পুরো ঋণ পরিশোধ করার সক্ষমতা আছে, তারাও অর্ধেক ঋণ পরিশোধ করবে। সেজন্য যাচাই-বাছাই করে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের চিহ্নিত করে এই সুযোগ দেয়া উচিত বলেও তারা মন্তব্য করেন।

এদিকে ১২ই ডিসেম্বর ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই’র সভাপতি মো. জসিম উদ্দিনের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ঋণ পরিশোধ করতে না পারলেও খেলাপি না করার সুযোগ জুন পর্যন্ত বাড়ানোর দাবি জানায়।

ওই বৈঠকের পরে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ব্যবসায়ীদের দাবিগুলো ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করা হবে। তারপর এই সার্কুলার জারি হলো।
এদিকে সার্কুলারে আরও বলা হয়েছে, এই ব্যবস্থায় ঋণ পরিশোধের পরিপ্রেক্ষিতে গ্রাহক ঋণের যে অংশ পরিশোধ করছে না অর্থাৎ বকেয়া হচ্ছে, সেই বকেয়া অর্থ গ্রাহক ঋণের মেয়াদের পরে দুই বছর ধরে পরিশোধ করতে পারবেন। যা আগে ছিল মেয়াদের পরে এক বছর। এখন ব্যাংক ও গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে আরও এক বছর সময় পাবেন ঋণ গ্রহীতা।

সংবাদটি শেয়ার করুন

সর্বশেষ

ফেসবুকে যুক্ত থাকুন

এই সম্পর্কিত আরও সংবাদ

সর্বশেষঃ