বাংলাদেশে আর একজন রোহিঙ্গাকেও ঢুকতে না দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিলেও মানবিক কারণে সরকার কঠোর হতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তিন দিনব্যাপী জেলা প্রশাসক সম্মেলনের সমাপনী দিনে বক্তব্য প্রদান ও মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।
বান্দরবান সীমান্তে সম্প্রতি কয়েক ডজন রোহিঙ্গার অনুপ্রবেশ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মোমেন বলেন, ‘এটা খুব জটিল সময়। আমাদের পলিসি হচ্ছে আর একটা রোহিঙ্গাকেও আমরা নেব না; কিন্তু আমরা তো ওদেরকে মারতে পারি না।’
এমন পরিস্থিতিও ব্যাখ্যা করেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমরা মিয়ানমার সরকারকে বলেছি, তোমরা তোমাদের লোকগুলো একটাও পাঠাবা না; কিন্তু তাদেরও ক্ষমতার বাইরে। কারণ ওখানে সংঘাত হচ্ছে। বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে, সেজন্য ভয়ে পালিয়ে আসছে।’
বিভিন্ন সময়ে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বর্বর নির্যাতনের শিকার হয়ে পালিয়ে আসা ১২ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ। তারা কক্সবাজার, টেকনাফের কয়েকটি ক্যাম্প ও ভাসানচরে বসবাস করছে।
মানবিক কারণে এতদিন ধরে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে এলেও শুরু থেকেই তাদের নিরাপদে, টেকসই ও মর্যাদার সঙ্গে মিয়ানমারে ফেরত নেওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে জোরালো দাবি জানিয়ে আসছে বাংলাদেশ।
আন্তর্জাতিক চাপের মুখে ২০১৭ সালের শেষদিকে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে রাজি হয়ে ওই বছর সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় চুক্তি করে। এরপর ২০১৯ সালে দুই দফা প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ নেওয়া হলেও রাখাইন রাজ্যের নিরাপত্তা পরিবেশ নিয়ে শঙ্কার কথা তুলে ধরে ফিরতে রাজি হননি রোহিঙ্গারা। সেই থেকে আটকে আছে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন। কবে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হবে- তা অনিশ্চিত।
এ বিষয়ে এক প্রশ্নে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সমাধান আমি এখনো জানি না। আমাদের অগ্রাধিকার হচ্ছে, তারা তাদের জন্মভূমে ফিরে যাবে। এটা আমাদের এক নম্বর অগ্রাধিকার, তাদের প্রত্যাবাসন করতে হবে। মিয়ানমারও বলেছে, তারা লোকগুলোকে নিয়ে যাবে; কিন্তু ৬ বছর চলছে, একটা লোকও যায়নি। তাদের মধ্যে আন্তরিকতার অভাব। তবে আমরা আমাদের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আমার কাছে কোনো সমাধান নাই।’