আমতলী পৌরসভা নির্বাচনের আর মাত্র একদিন বাকী। বৃহস্পতিবার মধ্য রাত থেকে প্রচার প্রচারনা বন্ধ। শেষ প্রচারনায় ব্যস্ত প্রার্থীরা। এ নির্বাচনে দুই মেয়র প্রার্থী সাবেক মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা নাজমুল আহসান খাঁন ও বর্তমান মেয়র মতিয়ার রহমানের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস পাওয়া গেছে। অভিযোগ রয়েছে দুই মেয়র প্রার্থীই অবাধে টাকা ছড়াচ্ছেন। ভোটার প্রতি তারা ৫ হাজার টাকা দিচ্ছেন। তবে নিরপেক্ষ ২০ ভাগ ভোটারই হবে জয়পরাজয়ের চাবিকাঠি।
জানাগেছে, আমতলী পৌরসভা নির্বাচন আগামী ৯ মার্চ। সুষ্ঠু ভোট গ্রহনে নির্বাচন সংশ্লিষ্টরা সকল কাজ সম্পন্ন করেছেন। মেয়র পদে ৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতা করলেও মুলত দুই প্রার্থী সাবেক মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা নাজমুল আহসান খাঁন ও বর্তমান মেয়র মতিয়ার রহমানের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। অপর সাত প্রার্থীর মধ্যেই জিল্লুর রহমান ছাড়া ছয় প্রার্থী নুসরাত জাহান,জহিরুল ইসলাম খোকন, ইফতেকার হাসান,আব্দুল্লাহ আল মামুন, আবুল কালাম আজাদ ও কামাল মৃধা ডামি প্রার্থী হিসেবে মতিয়ার রহমানের পক্ষে কাজ করছেন। তাদের নেই পোষ্টার, ব্যানার ও প্রচারনা। সর্বত্রই আলোচনা চলছে কে হচ্ছেন পৌর মেয়র নাজমুল না মতিয়ার? অভিযোগ রয়েছে দুই মেয়র প্রার্থী অবাধে টাকা ছড়াচ্ছেন। ১৫ হাজার ৮৩৯ ভোটের মধ্যে ৮০ভাগ ভোটার টাকা পাচ্ছেন এমন দাবী বিভিন্ন মহলের। তবে ২০ ভাগ নিরপেক্ষ ভোটারই জয় পরাজয় নিশ্চিত হবে। অভিযোগ রয়েছে ভোটার আইডি কার্ড রেখে দুই মেয়র প্রার্থীই ভোটার প্রতি ৫ হাজার করে টাকা দিচ্ছেন। এ সুযোগে ভোটাররা দুই প্রার্থীর কাছ থেকেই টাকা নিচ্ছেন।এছাড়াও দুই প্রার্থীর সমর্থকদের বিরুদ্ধে ভোটারদের হুমকির অভিযোগ রয়েছে।
ভোটাররা জানান, নির্বাচন শেষ হয়ে গেলে প্রার্থীরা আমাদের চিনবেন না। এখন যা পাচ্ছি তাই নিচ্ছি। ভোট দেয়া না দেয়া সেটা আমাদের একান্ত ব্যপার।
ভোটার মোস্তফা হাওলাদার, রিপন তালুকদার ও আবুল কালাম বলেন, ভোটার আইডি কার্ড রেখে মেয়র মতিয়ার রহমান জনপ্রতি ৫ হাজার টাকা করে দিয়েছেন। সাইদ, রাহিমা, জাকিয়া ও রত্তন বলেন, ৫ হাজার টাকা করে পেয়েছি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তিনজন বলেন, আমাদের ভোট নেই। মায়ের ভোটার আইডি কার্ড নিয়ে বলেছি, মা পর্দা করেন আসবেন না। পরে মেয়র মতিয়ার রহমানের লোকজন ভোটার নিশ্চিত করে ৫ হাজার করে টাকা দিয়েছেন। তবে এমন টাকা ছড়ানোর মধ্যেও দুই মেয়র প্রার্থীই জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।
মেয়র প্রার্থী মতিয়ার রহমান ভোটারদের টাকা দেয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থী নাজমুল আহসান খাঁন ভোটারদের টাকা এবং বহিরাগত সন্ত্রাসী এনে হুমকি দিচ্ছে। প্রশাসন বহিরাগত সন্ত্রাসী যদি প্রতিহত করতে না পারে তাহলে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হবে।
তিনি আরো বলেন, গত ১৩ বছর পৌর নাগরিকদের সেবা দিয়েছে। পৌরবাসী আমাকে ভালো ভাবেই মুল্যায়ণ করবেন।
মেয়র প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা নাজমুল আহসান খাঁন ভোটারদের টাকা দেয়া ও বহিরাগত সন্ত্রাসী আনার কথা অস্বীকার করে বলেন, প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থী মতিয়ার রহমান ভোটারদের টাকা দিচ্ছেন। গত ১৩ বছরে তিনি মেয়র থেকেও কোন উন্নয়ন করেনি। উন্নয়নের নামে ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। সেবার নামে পৌর নাগরিকদের হয়রানী করেছেন। তার সীমাহীন দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতায় মানুষ ক্ষুব্ধ। মানুষ এখন পরিবর্তন চায়। আমি আশা করি জনগন পরিবর্তনের পক্ষেই আমাকে রায় দিবেন।
আমতলী উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও সহকারী রিটানিং কর্তকর্তা সেলিম রেজা বলেন, সুষ্ঠু ভোট গ্রহনে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। আশা করি পৌরবাসীকে একটি সুষ্ঠু ও সুন্দর ভোট উপহার দিতে পারবো।